ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দেড় দশক পর ফেঞ্চুগঞ্জে ভোট উৎসব

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
দেড় দশক পর ফেঞ্চুগঞ্জে ভোট উৎসব নির্বাচনী পাঁচ প্রার্থী/ছবি: সংগৃহীত

সিলেট: দীর্ঘ ১৫ বছর পর ভোটের স্বপ্ন দেখছেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় ৭৩ হাজার ভোটার। অনিশ্চয়তা ঘেরা নির্বাচন! তারপরও ভাটা নেই নির্বাচনী আগ্রহে।

আগামী ২৯ মার্চ ভোট উৎসবে। এ নিয়ে ইউনিয়নগুলোর পাড়া-মহল্লায় ঘরে-বাইরে, হাট-বাজারে চলছে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ।

চায়ের দোকানে, আড্ডায় কিংবা গৃহিণীর মুখে কেবলই নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা কার গলায় পড়বে বিজয়ের মালা? দীর্ঘ বিরতির পর কে হচ্ছেন আগামী দিনের কান্ডারি?

প্রার্থীদের অনেকে আগে থেকেই মাঠ চষে বেড়ালেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় ভোটের সমিকরণ কঠিন হয়ে আসছে। ভোটারদের হিসাব-নিকাশে ওলট-পালট ধরাতে প্রার্থীরাও ঘুরছেন এপাড়া-ওপাড়ায়। পাড়া-মহল্লায় বৈঠক, কর্মী ও বর্ধিত সভা করছেন প্রার্থীরা। যদিও উচ্চ আদালতে ঝুলে আছে এ পাঁচ ইউনিয়নের মানুষের নির্বাচনী ভাগ্য।

এরপরও তফসিল ঘোষণায় উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্ধারণ করেছে। বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণ কেন্দ্রে প্রক্রিয়াধীন। দু’এক দিনের মধ্যে ধানের শীষে প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে-জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুজাত আলী রফিক বাংলানিউজকে বলেন, তৃণমূলের মতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ১ নম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়নে মাশার আহমেদ শাহ, ২ নম্বর মাইজগাও ইউনিয়নে জুবের আহমেদ চৌধুরী, ৩ নম্বর ঘিলাছড়া ইউনিয়নে হাজি আবুল লেইস চৌধুরী, ৪নম্বর উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নে লুদু মিয়া ও ৫নম্বর উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন।

সুজাত আলী রফিক বলেন, দলের মনোনীত এ পাঁচ প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা রয়েছে। অবশ্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পরও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাঠে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম বলেন, চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৬ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আবেদনকারীদের তালিকা এখন কেন্দ্রের হাতে রয়েছে। কেন্দ্র যাদের মনোনয়ন দেবে, দলের নেতাকর্মীরা তাদের জন্য মাঠে ভোট যুদ্ধে লড়বেন।

জেলা নির্বাচনী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তফসিল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ দিন। রোববার ও সোমবার (৪ ও ৫ মার্চ) বাছাই, ১২ মার্চ প্রত্যাহার এবং ১৩ মার্চ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ শেষে ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  

সিলেটের সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. হাসানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৭২ হাজার ৫৯২ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ৩৬ হাজার ৪০৯ এবং নারী ৩৬ হাজার ১৮৩ জন। পাঁচটি ইউনিয়নে ৯টি করে ৪৫টি কেন্দ্রে ১৯০ টি বুথে ভোট গ্রহণ হবে।

এর মধ্যে ১নম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নে ভোটার ১৪ হাজার ৭৮৩, ২নম্বর মাইজগাঁও ইউনিয়নে ১৯ হাজার ১৯২, ৩নম্বর ঘিলাছড়া ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৬৩৭, ৪নম্বর উত্তর কুশিয়ারায় ইউনিয়নে ১২ হাজার ৩২৭ এবং ৫ নম্বর উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নে ৯ হাজার ৬৫৩ জন ভোটার রয়েছেন।

নির্বাচনে রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিমল কান্দি পাল, সহকারী রিটানিং অফিসার হিসেবে থাকবেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৩ সালের ১ মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ, ২০০৯ সালে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ৩ টি ইউনিয়নকে ৫ টিতে রূপান্তর করায় নির্বাচন আটকে যায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে উপজেলার ৩ টি ইউনিয়ন ভেঙে ৫ টিতে রূপান্তরের গেজেট করে ৪ নম্বর উত্তর কুশিয়ারা ও ৫ নম্বর উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন নামে বর্ধিত দু’টি ইউনিয়নে রূপান্তর করা হয়। কিন্তু উত্তর ইসলামপুরের নাম বাদ পড়ায় ওই এলাকার জামাল মিয়া ভোটাধিকার পেতে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন (নম্বর ৯৯২৯/২০১১) দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে ঝুলে থাকে এ পাঁচ ইউনিয়নের নির্বাচন।

জামালের পক্ষে মামলায় লড়েন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু।  

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে মামলার শুনানিতে নির্ধারিত হবে এ পাঁচ ইউনিয়নের ভোটার ও প্রার্থীদের আশা আকাঙ্খা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮ 
এনইউ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।