ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ভাসছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৮
শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ভাসছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী লিটনের নির্বাচনী প্রচারণা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের আর মাত্র বাকি দু’দিন। এর মধ্যে শনিবার (২৮ জুলাই) মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে রাসিক নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। তাই শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী। প্রচারণার তুমূল আলোড়নে আজ  নগরবাসীও উদ্বেলিত।

প্রার্থীরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্ণা দিচ্ছেন কাকডাকা ভোর থেকে। প্রচারণা চলবে মধ্যরাত অবধি।

ভোটের আগে তাই চিরচেনা এ শহরের চিত্র যেন পাল্টে গেছে অনেকটাই। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পর টানা ১৮ দিনের প্রচার-প্রচারণা শেষে নাগরিকদের মুখে মুখে ‘কে পাস করবে’, ‘কার অবস্থান কেমন’ এসব প্রশ্ন ঘুরছে, চলছে হিসাব-নিকাশ। দুই প্রার্থীর প্রচারণা।  ছবি: বাংলানিউজপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক হাতে সমর্থকদের স্লোগানমুখর খণ্ড খণ্ড মিছিলে এখন উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে ২০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উত্তরের এই বিভাগীয় শহর।

বৃষ্টির কারণে আজ প্রচারণার শেষ দিনে প্রতিটি ওয়ার্ডে আবারও টানানো হয়েছে লেমিনেটেড পোস্টার। শেষ সময়ে তাই শহরের পথঘাট, অলিগলি, প্রধান সড়ক, সড়ক মোহনাগুলো ছেয়ে গেছে পোস্টার আর প্রতীকে। পাড়া-মহল্লার গলিপথ থেকে মাইকের ঝাঁঝালো শব্দে অনবরত ভেসে আসছে- ‘মা বোনদের বলে যাই ... মার্কায় ভোট চাই’, ‘মায়ের কোলে শিশুর ডাক...ভাই জিতে যাক’, ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক ... ভাই জিতে যাক’, ‘মাগো তোমার একটি ভোটে ... ভাই যাবে জিতে’, ‘পদ্মানদীর দুই কূল ... জিতে যাবে...’, ‘... ভাইয়ের দুই নয়ন, রাজশাহীবাসীর উন্নয়ন’ ইত্যাদি স্লোগান আর কোরাস। গণসংযোগ করছেন লিটন।  ছবি: বাংলানিউজচারদিকে এই আনন্দমুখর প্রচারণা-প্রতিযোগিতায় প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সামান্য কাদা ছোড়াছুড়ি থাকলেও পেশীশক্তি, সন্ত্রাস আর কালো টাকার দৌরাত্ম্য নজরে আসেনি এখনও। উত্তেজনা থাকলেও সহিংসতা, সংঘাত-সংঘর্ষের কালো থাবা রাসিক নির্বাচনকে এখন পর্যন্ত গ্রাস করতে পারেনি।

ভোটাররা বলছেন, পরিস্থিতি এমন থাকলে নির্বাচনে কোনো পক্ষীয় প্রভাব ছাড়াই ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’ স্লোগানের বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে পারবেন তারা।

এদিকে রাসিক নির্বাচনে মেয়র পদের লড়াইয়ে অবতীর্ণ পাঁচ প্রার্থীর সারির পুরোভাগে থাকা প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোটের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বাংলানিউজকে জানান, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে টেনশন বাড়ছে। এই দুই প্রার্থী আজ সমানতালে শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, বিপণিবিতানগুলোয় গণসংযোগ চালাচ্ছেন। প্রচারণা যুদ্ধে তারা একে অপরকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখছেন। গণসংযোগ করছেন বুলবুল।  ছবি: বাংলানিউজনির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে নৌকার প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন দাবি করলেও তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এনিয়ে দুপুরে উভয়প্রার্থীই পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। এতে একই অভিমত প্রকাশ করেছেন হেভিওয়েট ওই দুই প্রার্থী।

শান্তিটপূর্ণ ভোট নিয়ে আশঙ্কার কথা উড়িয়ে রাসিকের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, সব প্রস্তুতি শেষ। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার কমিশন তার সবটাই নিয়েছে। নির্বাচন চলাকালীন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার সকাল থেকে রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়া ২০টি ওয়ার্ডে ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। আর সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের জন্য ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। তারা ভোটের দুদিন আগে অর্থাৎ আজ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রয়োজন হলে তারা ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা করবেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা ও জরিমানাসহ সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন৷  

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত রাজশাহীতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শীর্ষ এই নির্বাচন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৮
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।