ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনী ব্যয়: বিএনপি-জাপাসহ ৩৭ দলকে সতর্ক করলো ইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
নির্বাচনী ব্যয়: বিএনপি-জাপাসহ ৩৭ দলকে সতর্ক করলো ইসি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির লোগো

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৩৯টি দলের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ছাড়া অন্য কোনো দল নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি। তাই বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) ৩৭টি দলকে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার উপসচিব আব্দুল হালিম খান বাংলানিউজকে বলেন, ব্যয়ের হিসাব জমা না দেওয়া দলগুলোকে (সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক) নোটিশ অব ওয়ার্নিং দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চিঠি আজকেই ইস্যু হয়েছে।

তবে প্রাপকের (সবগুলো দলের) কাছে হয়তো আজই পৌঁছাবে না।

তিনি বলেন, ৩৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে কেবল আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৪৪ সিসিসি (৫) দফা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সতর্ক করে ৩০ দিন সময় দেবে নির্বাচন কমিশন। এই ত্রিশ দিনের মধ্যে কোনো দল হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে কমিশন চাইলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে আরও ১৫ দিন সময় দিতে পারে। এই ১৫ দিনের মধ্যেও হিসাব জমা না দিলে কমিশন সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিল করে দেবে।

নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দল পরবর্তীতে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কেননা, বর্তমানে সব নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরপিও অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি টাকা করা যায়। সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা এবং ২শ’র বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারে।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয়বাদী দল বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় সীমা ছিল। কেননা, এই তিনটি দলের প্রার্থী রয়েছে দু’শ’র বেশি। আর জাতীয় পার্টির ব্যয়সীমা ছিল তিন কোটি টাকা। কেননা, দলটির প্রার্থী রয়েছে ১শ’র বেশি।  

সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের ২৫৮ জন, বিএনপি’র ২৪২ জন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র ২৯৯ জন প্রার্থী ছিল। আর জাতীয় পার্টি ১৭৪ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল।  

দলগুলো চাঁদা ও অনুদান অন্যান্য খাত থেকে আয় করতে পারে। নির্বাচনে ব্যয়ও করতে হয় নির্ধারিত খাতে। এক্ষেত্রে পার্টি প্রধানের ভ্রমন, পোস্টার, প্রচারকাজের জন্য ব্যয় করতে হয়।  

এদিকে আরপিও অনুযায়ী, ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয়। এরইমধ্যে সে সময় অতিবাহিত হয়েছে। যারা হিসাব দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন।  

দশম সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সময় মতো ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় মামলা করেছিল নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ১২টি দল নব্বই দিনের মধ্যে হিসাব না দেওয়ায় সতর্কবার্তা পেয়েছিল।  

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপিসহ অন্য দল নোটিশ পাওয়ার পরও ব্যয়ের হিসাব না দিলে, আরপিও অনুযায়ী নিবন্ধন বাতিল করা হবে।  

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪১টি। দশম সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কংগ্রেস নামের একটি দল ডাব প্রতীকে নিবন্ধন সনদ পেয়েছে। তার আগে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম সিংহ প্রতীকে নিবন্ধন পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।