ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

প্রবাসে এনআইডি: ‘গলাকাটা’ পাসপোর্টধারী ধরা পড়বে সহজে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
প্রবাসে এনআইডি: ‘গলাকাটা’ পাসপোর্টধারী ধরা পড়বে সহজে

ঢাকা: প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ সম্পন্ন করা গেলে ধরা পড়বেন ‘গলাকাটা’ পাসপোর্টধারীরা। এক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশি-ই নয়, যদি কেউ বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে থাকে ধরা পড়বেন তারাও।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশেই এনআইডি সরবরাহ করা হবে। এ কাজ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পরিচিতি যাচাই করে দেওয়া হবে।

এক্ষেত্রে কোনো দেশের ইমিগ্রেশন বিভাগ যদি কোনো ব্যক্তির শনাক্ত করে দেওয়ার আবেদন করে, তাহলে খুব সহজেই বলা যাবে, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক কি-না।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নাগরিক না হয়েও অনেকে অপরাধে জড়ালে বাংলাদেশের নাগরিক বলে পরিচয় দেয়। এমনকি কেউ কেউ বাংলাদেশের পাসপোর্টও প্রদর্শন করে।

ফলে দেশের সুনাম নষ্ট হওয়ার পাশপাশি বৈধ প্রবাসীদের ওপর প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে কোনো দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ অপরাধীদের পরিচিতি প্রকাশ করলে, সহজেই বলে দেওয়া সম্ভব হবে- সে বাংলাদেশি কিনা!

এ বিষয়ে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশনস) মো. আবদুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রবাসীদের এনআইডি সরবরাহের কাজ আমরা শুরু করেছি। এটি বাস্তবায়ন হলে যারা আমাদের নাগরিক নন, তারা সহজেই চিহ্নিত হবে। ‘গলাকাটা’ পাসপোর্টধারী কিংবা ভিনদেশের নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ গেলে, আমরা তাদের (সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষ যদি চায়) বলে দেবো, এটা আমাদের নাগরিক নয়।

গত ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অনলাইনে আবেদন নেওয়ার মাধ্যমে প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশেই ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৮ নভেম্বর দু্বাইয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।  দুবাইয়ের পর সৌদি আরব, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরতরদেরও ভোটার করে নেওয়া হবে।

এনআইডি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম জানান, মোট ছয়টি ডকুমেন্ট দিতে হবে প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার জন্য। এগুলো হলো- পাসপোর্টের ফটোকপি, বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের ফটোকপি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে শনাক্তকারী একজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের কপি, বাংলাদেশে বসবাসকারী রক্তের সম্পর্কের কোনো আত্মীয়ের নাম, মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বরসহ অঙ্গীকারনামা,  বাংলাদেশে কোথায়ও ভোটার হয়নি মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রত্যয়নপত্র।

তিনি বলেন, এসব তথ্য দিয়ে যখন কেউ ভোটার হবেন, তখন ইসির তদন্তে ব্যক্তির পরিচিতি নিশ্চিত হবে। যার ভিত্তিতে দেওয়া হবে এনআইডি। ফলে কেউ যদি নাগরিক না হয়, তদন্তে স্বাভাবিকভাবেই তার দেওয়া তথ্যের মিল থাকবে না। ফলে সহজেই চিহ্নিত হবে বাংলাদেশের নাগরিক।

জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে দেড় কোটির মতো বাংলাদেশের নাগরিক বসবাস করছে।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে। যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। গড়ে তোলা হয় এনআইডি তথ্য-ভাণ্ডার।

বর্তমানে ৫০টির বেশি সংস্থা-প্রতিষ্ঠান এই তথ্য-ভাণ্ডার থেকে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করছে। এতে অপরাধী চিহ্নিতকরণসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধান সহজতর হয়েছে। এছাড়া সহজেই মিলছে বিভিন্ন নাগরিক সেবা।

ইসির সার্ভারে বর্তমানে ১০ কোটি ৪২ লাখ নাগরিকের তথ্য আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
ইইউডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।