ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেছেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ কাল্পনিক, বাস্তব সম্মত নয়।
এইচটি ইমাম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে নেই। তাই তাদের শক্তি বিএনপির সঙ্গে যোগ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী-সমর্থকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার।
এইচটি ইমাম বলেন, সবকিছুর দাবি জানানোর নির্বাচন কমিশনই একমাত্র স্থল। ইসিকে শক্তিশালী করার জন্য সব দিক থেকেই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এজন্যই তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে এসেছি। ঘরে বসে গণমাধ্যমের খবর যা দেখছিলাম, তাতে সব জায়গায় আনন্দমুখর পরিবেশ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
তবে এ পর্যন্ত চৌমোহনীর বেশ কটি জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় জামাত শিবিরের লোকেরা আমাদের কর্মী সমর্থকদের বের করে দিয়েছে। অনেক জায়গায় পুলিশ, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেটরাও ভালো ব্যবহার করছেন না। আমরা চেয়েছিলাম সবার জন্য সমান সুযোগ। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলেছেন জিরো টলারেন্স এগেইনস্ট ভায়োলেন্স। কোনো ভায়োলেন্স সহ্য করা হবে না। কিন্তু সেটি করতে যেয়ে কোথাও কোথাও বাড়াবাড়ি দেখতে পাচ্ছি।
এইচটি ইমাম বলেন, পাবনার সাথিয়ায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট ঝামেলা করছেন। তাকে তো আর বলবো না। তাই ইসিকে জানালাম। সাতক্ষীরা, দিনাজপুরেরও একই অবস্থা। গাইবান্ধার দিকেও বেশ কিছু জায়গায় জামায়াত বিএনপির সমর্থকরা বাড়াবাড়ি করছে।
এইচটি ইমাম বলেন, জাময়াত যেহেতু নির্বাচনে নেই। তাই তাদের শক্তি বিএনপির সঙ্গে যোগ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা ৫ জানুয়ারির সেই অগ্নিসন্ত্রাসের শক্তি বিএনপি সঙ্গে যোগ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। চাঁদপুরেও ম্যাজিস্ট্রেট এর প্রশ্রয়েই গোলযোগ হয়েছে। ইসিকে এটিও আমরা জানিয়েছি। এছাড়াও কুড়িগ্রামে জেলা আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে রেইড করা হয়েছে, বাগেরহাট, টাঙ্গাইলেও একই ঘটনা ঘটেছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এসব ঘটনা ইসির ব্যর্থতা নয়, কোনো কোনো জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীই বাড়াবাড়ি করছে। সরকারেরই কেবল প্রভাব থাকে তা নায়, সরকারের ভেতরেও তো অন্যরা থাকে। তাই সরকার যাতে বিব্রত হয় তারা এমন কাজ করেন। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। কিন্তু সরকারের হাতে তো কিছু নেই। সব ইসির হাতে। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চেয়েছিলাম। আমার নিজের তার সঙ্গে সিনিয়র, জুনিয়রের সম্পর্ক। তারপরও তিনি বললেন, স্যার কারো সঙ্গেই দেখা করবো না।
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫৫টি কেন্দ্রেরে মধ্যে ১৪টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছে ইসি।
বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ের অভাবেই গোলাযোগ হয়েছে এমন মত দিয়ে তিনি বলেন, তাদের উপর অবশ্যই ইসির নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে।
গণমাধ্যমে দেখেছি, সুন্দরভারে আনন্দমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে। ১৪ সেন্টার বন্ধ হলে পারসন্টেস কি বলে? এটাকে কি প্রভাবিত বলে? সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন এইচটি ইমাম।
তিনি বলেন, বিএনপি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও জামায়াত-বিএনপিই আমাদের প্রার্থী সমর্থকদের ওপর হামলা করছে। বিএনপি কাল্পনিক অভিযোগ করছে, তাদের অভিযোগ বাস্তব সম্মত নয়। কেননা, বিএনপির নেতারা নিজেরাই গায়েব হয়ে যান, আবার বের হয়ে আসেন। কিন্তু বলেন তাদের গুম করা হয়েছে।
আগের নির্বাচনের থেকে গুণগত মানের অনেক পরিবর্তন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন এইচটি ইমাম।
এ সময় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। আমওয়ামী লীগের এই প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে সাক্ষাত করতে না পারলেও জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক ও জাবেদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘন্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ইইউডি/এমএমকে