ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

তারুণ্যের উন্মাদনা ও অব্যবস্থাপনায় শেষ হলো কোক স্টুডিও বাংলার কনসার্ট 

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
তারুণ্যের উন্মাদনা ও অব্যবস্থাপনায় শেষ হলো কোক স্টুডিও বাংলার কনসার্ট 

দ্বিতীয়বারের মত কনসার্ট আয়োজন করল কোক স্টুডিও বাংলা। ছুটির দিনে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে শতাধিক শিল্পী নিয়ে হয়ে গেল বিশাল আয়োজন।

এই কনসার্ট ঘিরে যেমন ছিল তারুণ্যের উন্মাদনা তেমনই ছিল অব্যবস্থাপনা। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অধিক দর্শক, প্রবেশ পথে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, টিকিট থাকা সত্ত্বেও শোতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার পর থেকে কনসার্ট প্রাঙ্গণে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। প্রবেশ পথে টিকেট চেক করে ভিতরে ঢুকানো হলেও কনসার্টের মূল অংশে ঢুকতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।

নাজিয়া নামের এক দর্শক বলেন, আমার হাতে ভিআইপি টিকেট। গেট নাম্বার ১, কিন্তু আমি সেখানে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে আসি। ধাক্কাধাক্কি, বাজে পরিস্থিতির শিকার হয়েছি। এমন অবব্যবস্থাপনা আশা করিনি।  

কনসার্টের মাঝপথেই বের হয়ে আসে একাধিক দর্শক। এক দর্শক বলেন, ভেতরে  স্থির হয়ে গান শোনার মতো অবস্থা নেই। কিছুক্ষণ পরপরই লোকজন এসে ঘাড়ে পড়ছে। দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। থাকতে না পেরে বের হয়ে চলে আসি।  

এর আগে দুপুর দেড়টায় আর্মি স্টেডিয়ামের খোলার পর থেকেই তরুণ সঙ্গীতপ্রেমীরা অনুষ্ঠানস্থলে ভিড় করতে থাকেন। কনসার্ট শুরুর পরও বাইরে দর্শকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

আয়োজনের শুরুতেই অতিথিদের স্বাগত জানান এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপস্থাপক ও জনপ্রিয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আমিন হান্নান চৌধুরী এবং জুনায়েদ রাব্বানী। দর্শকরা এই কৌতুক বেশ উপভোগ করেন। এরপর কোক স্টুডিও বাংলা'র গানের সঙ্গে বিশেষ একটি পরিবেশনায় অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  

এরপর বিকেল বিকেল চারটার পর মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল হাতিরপুল সেশনস। ‘সেই পাখিটা’ গান দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে প্ল্যাটফর্মটি। এরপর নিজেদের শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো শোনায় তারা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দর্শকরা তাদের গান উপভোগ করেন।  

সন্ধ্যার পর মঞ্চে কেক স্টুডিও বাংলার প্রথম সিজনের প্রথম গান 'নাসেক নাসেক' গানটি দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে কোক স্টুডিও বাংলা। কনসার্টটি ৫টি অংশে বিভক্ত ছিল, যেখানে প্রতিটি অংশে দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে কোক স্টুডিও বাংলা'র প্রথম ও দ্বিতীয় সিজনের গানগুলো উপভোগ করেন। কনসার্টে পরিবেশিত গানগুলো শুধু এই কনসার্টের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। এর জন্য মূল গানগুলোর কথার সঙ্গে নতুন কিছু চরণ যুক্ত করা হয়েছে।

কোক স্টুডিও বাংলা’র সঙ্গীত প্রযোজক শায়ান চৌধুরী অর্ণব বলেন, কোক স্টুডিও বাংলা সবসময়ই নতুন কিছু করার, বাংলা সঙ্গীতকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে এসেছে। ভক্তদের সরাসরি সেই অনন্য সুরের স্বাদ উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছে। যে পরিমাণ ভক্তরা কনসার্টে উপস্থিত হয়েছেন, আর যে ভালোবাসা তারা আমাদের দেখিয়েছেন, এতে আমরা সত্যি খুবই আনন্দিত। এই ভালোবাসা ভক্তদের জন্য আরও নতুন কিছু নিয়ে আসতে আমাদের উৎসাহিত করবে।

কনসার্টের পুরো সময় জুড়ে দর্শকরা প্রথম ও দ্বিতীয় সিজনে তাদের পছন্দের গানগুলোর বিশেষ কনসার্ট সংস্করণ উপভোগ করেন। গানের সঙ্গে সঙ্গে আরও ছিল নৃত্যপরিচালক ও নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ এবং শামীম আরা নীপা'র পরিচালনায় নৃত্যাঞ্চল নৃত্য দল এবং ম্যাশমাহবুব কোরিওগ্রাফি’র অসাধারণ নৃত্য। এতে গানগুলোতে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা।

কোক স্টুডিও বাংলা'র শিল্পীদের পাশাপাশি লালন ব্যান্ড এবং আর্টসেলের দুর্দান্ত পরিবেশনাও সবার মন জয় করে নিয়েছে। তবে শেষটা হয় কোক স্টুডিও দ্বিতীয় সিজনের 'দেওড়া' গানটি পরিবেশনার মধ্যদিয়ে। এই পুরো কনসার্টে কিছু অব্যবস্থাপনার বাইরে তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করে কোক স্টুডিও বাংলা। এরপর প্রায় ১০০জন গায়ক ও শিল্পীকে নিয়ে দুই সিজনে ২২টি গান প্রকাশ করেছে প্ল্যাটফর্মটি। গেল বছরের জুনে কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।