ঢাকা: কলকাতায় চলমান চতুর্থ আন্তর্জাতিক থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নিয়েছে নাট্যগোষ্ঠী ‘প্রাচ্যনাট’।
আগামী বুধবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টস মিলনায়তনে প্রাচ্যনাট’র ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে।
কালিন্দি ব্রাত্যজন আয়োজিত বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) শুরু হওয়া উৎসবটি চলবে আগামী বুধবার (১০ জুন) পর্যন্ত।
ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ির কাহিনি সংক্ষেপ
২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল গভীর রাতে সাভারের পলাশবাড়িতে ধসে পড়ে স্পেকট্রাম সোয়েটার অ্যান্ড নিটিং ফ্যাক্টরি। সে সময় ফ্যাক্টরিতে রাতের শিফটে কাজ করছিলেন শতাধিক কর্মী। সেই ঘটনায় নিহত হন প্রায় ৬৪ জন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানা যায়, কোনোরকম ঝুঁকি মোকাবেলার ব্যবস্থা ছাড়াই ঘটনার তিনবছর আগে একটি জলাভূমির উপর ফ্যাক্টরিটি তৈরি হয়েছিলো।
ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি নাটকটি সেই ঘটনাকেই কেন্দ্রীভূত করে লেখা, যেখানে একক চরিত্র তারাভান। সেদিনের নাইট শিফটে কাজ করতে আসা কর্মীদেরই প্রতিচ্ছবি। নাটকটি গ্রন্থিত হয় তার স্মৃতিচক্র, স্বপচক্র আর জীবনচক্রের রোমন্থনে। যেকোনো সময় মাথার উপর ছাদ ভেঙে পড়ে পিষে দেবে তার জীবন, এমনকি তার নড়ার উপায়টুকুও নেই। এরকম অবস্থায় সে যেন তার সমগ্র জীবনের পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব মিলিয়ে নেয়। সেই হিসেবে সে প্রতিনিধিত্ব করে তারই মতো শত শত তারাভানের। যাদের অনেকেই এভাবে মরে যায়, আবার কেউ কেউ বেঁচে থাকে কারখানার মেশিনের মতো নির্বাক আজ্ঞাবহ দাস হয়ে।
তারাভানের স্মৃতিচক্রের সমান্তরালে একই ঘটনাকে দেখা যায়, একজন ভিনদেশি আউটসোর্সিং পারসন মিস্টার ওয়েস্টের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এই আকস্মিক ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়া বিশ্বমঞ্চে যেসব চিত্র তুলে ধরে সেগুলো তারাভানরা কখনও জানে না, কিংবা জানার সুযোগ পায় না।
কুশীলব
তারাভান চরিত্রে পারভীন সুলতানা কলি/পারভীন পারু, স্বামী/বুজান/ মহিলা ১ চরিত্রে মোহাম্মদ রফিক/প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষ, ওসমান/শ্বশুর/ শ্বাশুড়ি/গ্রামবাসী ১/মহিলা ২ চরিত্রে রিফাত আহমেদ নোবেল/সুদীপ বিশ্বাস দীপ/শাহরিয়ার রানা, গ্রামবাসী ২/নাগরিক ১/গার্মেন্টস কর্মী ১ চরিত্রে গোপী দেবনাথ/মো. ফরহাদ আহমেদ এবং গ্রামবাসী ৩/ নাগরিক ২/ গার্মেন্টস কর্মী ২ চরিত্রে অভিনয় করছেন মনিরুজ্জামান/ফুয়াদ বিন ইদ্রিস।
নেপথ্যে
নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। এছাড়া মঞ্চ ও আলো আবুল হাসনাত ভূঞা রিপন, সঙ্গীত ও শব্দ পরিকল্পনা নীল কামরুল, কোরিওগ্রাফি সড়বাতা শাহরিন, মো. ফরহাদ আহমেদ, পোশাক বিলকিস জাহান জবা, দ্রব্য সামগ্রী আফসান আনোয়ার, ভিডিও চিত্র নির্মাণ সাইফুল ইসলাম জার্নাল, পোস্টার, লিফলেট ও টিকেট সব্যসাচী হাজরা, সহকারী নির্দেশনা জগন্ময় পাল ও বাকার বকুল, নির্দেশকের সহকারী প্রজ্ঞা তাসনুভা রূবাইয়াৎ, মঞ্চ সহকারী রেজাউল রেজা ও শশাংক সাহা, আলো সহকারী মোখলেছুর রহমান, সঙ্গীত ও শব্দ প্রয়োগ চেতনা রহমান ভাষা ও বিন-ই-আমিন, গান সংগ্রহ রন্তিক বিপু, পোশাক সহকারী কামরুন নাহার মণি, দ্রব্য সামগ্রী সহকারী গোপী, নায়ীমী ও রাকা, ভিডিও চিত্র নির্মাণ সহকারী আল-আমিন খন্দকার, রায়হান রাফি ও
রায়হান আফসার, ভিডিও ভয়েস হীরা চৌধুরী ও আরেফ সৈয়দ, আলোকচিত্র জাঈদ ইসলাম ও প্রজ্ঞা, মঞ্চ নির্মাণ দীপ, ফুয়াদ, আরিফ, রাজু, রানা, অভিক, পাভেল, আদনান, ইভন, আতিক, ইমন, রিপা, রিতা ও রিংকু, আলো সরবরাহ স্পটলাইট এবং মিলনায়তন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রাচ্যনাট কর্মীরা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৫
এটি/এসএস