ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

খুলনার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শকদের ভিড়

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৬
খুলনার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শকদের ভিড় ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: ভ্যাপসা গরম। দীর্ঘ লাইন।

তবু যেন কারও অধৈর্য নেই। ঈদের ছয় দিন পরও খুলনার অভিজাত শঙ্খ সিনেমা হলে ‘বাদশা-দ্য ডন’ ছবি দেখতে অসংখ্য দর্শককে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ ও প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতে দেখা গেছে।

অনেকেই টিকিট না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। আবার অনেকে ফিরেও গেছেন। দর্শকদের ভিড় দেখে অনেকে মনে করছেন চলচ্চিত্রে আবারও সোনালি যুগ ফিরে এসেছে।

কলকাতা ও বাংলাদেশে একযোগে মুক্তি পাওয়া ‘বাদশা-দ্য ডন’ পরিচালনা করেছেন বাবা যাদব। এতে ওপার বাংলার সুপারস্টার জিতের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বাংলাদেশের গ্ল্যামার গার্ল নুসরাত ফারিয়া। এবারই প্রথম কোনো ঈদে বাংলাদেশে মুক্তি পেলো জিতের ছবি। দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তাকে দেখার জন্য।

জাজ মাল্টিমিডিয়া ও এসকে মুভিজের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটি খুলনার দর্শকদের মন কেড়েছে। তাই মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার শো দেখতে ১ হাজার ২০০ ধারণক্ষমতার শঙ্খ সিনেমা হল কানায় কানায় ভরে গেছে। এর চিত্রনাট্য লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন সাহা ও কলকাতার জিৎ গাঙ্গুলী।

ছবি দেখতে আসা কলেজ ছাত্র মারুফ জানান, ইউটিউবে এ ছবির একটি গান দেখে তার আগ্রহ জন্মায়। তাই প্রেক্ষাগৃহে এসেছেন। তিনি আরও জানান, ঈদের পর কয়েকবার টিকিটের জন্য প্রেক্ষাগৃহে এসেও ফিরে গেছেন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার শোর টিকিট পেয়েছেন।

একইভাবে বান্ধবীদের নিয়ে আসা নুসরাত নামের এক দর্শক বলেন, ‘সুরমা লাগারে, আঁতর লাগারে, আকাশে খুশির চাঁদ উঠেছে, ঈদ ঈদ ঈদ ঈদ এসেছে- ছবিটির এই গান দেখে কৌতূহল জন্মেছিলো তাদের। তিনি জানান, জিৎ-ফারিয়া ছাড়াও এ ছবিতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, বলিউডের শ্রদ্ধা দাস। তারা সবাই আমার পছন্দের। ’

শঙ্খ সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবার হোসেন রাজু বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ এক যুগের মধ্যে এতো দর্শক সিনেমা হলে আসেননি। ঈদের দিন থেকেই প্রেক্ষাগৃহ কানায় কানায় পূর্ণ। শঙ্খ ছাড়াও নগরীর চিত্রালী সিনেমা হলে চলছে ছবিটি। এখানে এসেও দেখা গেছে, বহুদিন পর এটিও কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে দর্শকে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রতি বছর ঈদের সময় পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর খুলনায় সেরকম কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জে শোলাকিয়ায় যে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে সে কারণে কেউ অনুষ্ঠান করতে সাহস বা অনুমতি পায়নি। এ কারণে মানুষ সিনেমা হলমুখী হয়েছেন।

নব্বই দশকেও খুলনার বিভিন্ন উপজেলাসহ মহানগরীতে ২০টি সিনেমা হল ছিলো। এগুলো হলো মহানগরীর শঙ্খ, সোসাইটি, সঙ্গীতা, চিত্রালী, জনতা, ঝিনুক, পিকচার প্যালেস, উল্লাসিনী, বৈকালী, স্টার, লিবার্টি, মিনাক্ষী, ডুমুরিয়া উপজেলায় নাগমা (বর্তমান শঙ্খমহল), চুকনগরের হিরামণ, তালা উপজেলার ফাল্গুনী, রূপসা উপজেলার রূপসা সাগর, পাইকগাছার বাসুরী, কপিলমুনির সোহাগ, সেনহাটির রূপসা ও ফুলতলার শাপলা।

এগুলোর মধ্যে ঝিনুক, পিকচার প্যালেস, উল্লাসিনী, বৈকালী, স্টার, লিবার্টি, মিনাক্ষী, ডুমুরিয়া উপজেলায় শঙ্খমহল, চুকনগরের হিরামণ, তালার ফাল্গুনী, রূপসা উপজেলার রূপসা সাগর, পাইকগাছার বাসুরী, কপিলমুনির সোহাগ, সেনহাটির রূপসা ও ফুলতলার শাপলা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। অস্তিত্ব হারিয়েছে স্টার ও বৈকালী সিনেমা হল দুটি। বর্তমানে নগরীতে শুধু শঙ্খ, চিত্রালী, সঙ্গীতা, সোসাইটি ও জনতা হলগুলো চালু রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৬
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।