জাপানের সর্বকালের অন্যতম সফল চলচ্চিত্র ‘তোরা-সানস সানরাইজ অ্যান্ড সানসেট’ প্রচার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলে। ঢাকার জাপান দূতাবাস, জাপান ফাউন্ডেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এনটিভিতে প্রচার হবে ছবিটি।
দূতাবাস জানায়, জাপান ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এনটিভিতে প্রচারিতব্য বাংলায় ডাবিং করা ‘তোরা-সান’ সিরিজের তিনটি নির্বাচিত ছবি কেবল বিনোদনই নয়, বরং জাপানের সংস্কৃতি এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে বাংলাদেশের দর্শককে পরিচয় করিয়ে দেবে।
ছবিটির বিবরণে বলা হয়েছে, হাস্যরসের সঙ্গে মানবতাবোধে পরিপূর্ণ এই ছবি দর্শককে কখনও হাসাবে, কখনও কাঁদাবে। তোরা সান নামের এক ভবঘুরের ব্যর্থ প্রেমের কাহিনী আর পরিবারের কথা নিয়ে গড়ে উঠেছে গল্পটি। প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো এই মানুষটি হঠাৎ টোকিওর শহরতলীর নিজ বাড়িতে হাজির হয়।
‘তোরা-সানস সানরাইজ অ্যান্ড সানসেট’-এর চরিত্রগুলোর গভীরতা আর আবেগে সমৃদ্ধ ছবিটি দেখতে দীর্ঘদিন জাপানের প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমিয়েছে দর্শকরা। ১৯৬৯ সালে প্রথমবার নির্মাণের পর তুমুল জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় তোরা সানকে নিয়ে মোট ৪৮টি পর্ব তৈরি হয়েছে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৭ সালে এর একটি বিশেষ পর্বও প্রদর্শিত হয়।
এ সিরিজের আরও দুটি ছবি এনটিভিতে দেখানো হবে বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস। ‘তোরা-সানস মেনি স্প্লিন্টারড লাভ’ এবং ‘তোরা-সান গোজ নর্থ’ নামের পর্ব দুটির প্রদর্শনের তথ্য পরবর্তীতে এনটিভির ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশস্থ জাপান দূতাবাসের কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে তোরা-সান’স সানরাইজ অ্যান্ড সানসেটের ১৭তম সিরিজের প্রথম প্রদর্শনী হয়। এর কাহিনী এমন- উয়েনোর একটি পানশালায় এক বুড়োর সঙ্গে দেখা হয় তোরা-সানের। সে বুড়োকে ভিখারি ভেবে ভুল করে, পরে এ নিয়ে তার অনুশোচনা হয়। তখন সে বুড়ো লোকটিকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানায়। বাড়ির মানুষজন জেনে অবাক হয় যে, এই বুড়ো লোকটি বিখ্যাত চিত্রশিল্পী সেইকান ইকেনোউচি, জাপানি সব ধরনের চিত্রকলায় যার পারদর্শিতা সর্বজনবিদিত।
তোরা-সানের পরিবারের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে সেইকান তাদের জন্য একটি চিত্রকর্ম তৈরি করে উপহার দেন। এই উপহারে তোরা-সান মুগ্ধ হয়, তবে এরপর সে সেইকানকে আরও কিছু চিত্রকর্ম উপহার দিতে বলে এবং সেগুলো বিক্রি করে সে তার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ফন্দি আঁটে। তখনই বেঁধে যায় গন্ডগোল। এই ঝামেলা উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তোরা-সান আবারও ঘর ছাড়ে এবং হিয়েগো প্রিফেকচারের তাৎসুনো শহরে পাড়ি জমায়। সেখানে ঘটনাচক্রে আবারও তার দেখা হয় সেইকানের সঙ্গে। বিখ্যাত এই চিত্রশিল্পীর সম্মানে শহরে এক ভোজের আয়োজন করা হয়, জমায়েত হয় গেইশাদের।
তোরা-সানও বেশ উপভোগ করে এই আয়োজন। এরই মধ্যে বোতান নামে এক গেইশার সঙ্গে তোরা-সানের বেশ ভাব জমে যায়। বোতান তাকে জানায়, কিতো নামে তার এক খদ্দের তার কাছ থেকে ২০ লাখ ইয়েন ধার নিয়ে টোকিওতে পালিয়ে গেছে। বোতান এই ঠকবাজকে ধরার জন্য টোকিও যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তোরা-সানও বোতানকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
তোরা-সান এবং সেইকানের রসায়ন পুরো ছবিতে এনেছে দারুণ এক আবহ। এ ছবিতে খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী সেইকান আর তোরা সানের যুগলবন্দি অন্য পর্বগুলোর মতোই দারুণ হাস্যরস তৈরি করেছে। গেইশার চরিত্রে কিওয়াকো তাইচির দারুণ উপস্থিতি ছবিটিকে করে তুলেছে স্মরণীয়। সেই সঙ্গে কিংবদন্তি অভিনেত্রী য়োশিকো ওকাদা এই ছবিতে সেইকানের সাবেক প্রেমিকা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে জাপানি চলচ্চিত্রের জগতে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
জেপি/জেএইচ