ভারতের বাংলা ছবির জনপ্রিয় নায়িকা শুভশ্রী সম্প্রতি ঢাকা ঘুরে গেলেন। তার অভিনীত ‘প্রেম কি বুঝিনি’ মুক্তি পাবে আগামী ৭ অক্টোবর।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে এলেন শুভশ্রী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এসে পরদিনই আবার তিনি ফিরে যান কলকাতায়। ঝটিকা সফরে একফাঁকে ঢাকায় আসা, নতুন ছবি ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ২৫ বছর বয়সী এই তারকা।
বাংলানিউজ: এবার ঢাকায় এসে ঘোরাঘুরি বা কেনাকাটা করেছেন?
শুভশ্রী: এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসার সুযোগ হলো। দুই বছর আগে এসেছিলাম যৌথ প্রযোজনায় বানানো ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ ছবির কাজে। তখন বেশ কিছুদিন ছিলাম। কিন্তু এবার হাতে একেবারেই সময় নেই। তাই ইচ্ছে থাকলেও ঘোরাঘুরি কিংবা কেনাকাটা করতে পারছি না।
বাংলানিউজ: বাংলাদেশের ভালোলাগা খাবারের কথা বলুন।
শুভশ্রী: গতবার এখানে এসে রসগোল্লার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম! আমি মিষ্টি খেতে পছন্দ করি। গতবার মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলাম কলকাতায়। এবার এসেও মিষ্টি খেয়েছি। সঙ্গে করে নিয়েও যাবো। তবে বাংলাদেশের ইলিশের সুনাম শুনলেও খাওয়া হয়নি। কারণ আমি কোনো মাছই খাই না।
বাংলানিউজ: দুই বাংলার তরুণীদের মধ্যে মিল-অমিল কী কী দেখলেন?
শুভশ্রী: আমি তো এখন পশ্চিমবঙ্গেই আছি বলে মনে হচ্ছে! দুই বাংলার মানুষের মধ্যে সব ধরনের মিল রয়েছে। পোশাক, খাবার, ভাষা সবকিছুতেই মিল পেয়েছি। এপার বাংলা আর ওপার বাংলার মধ্যে পার্থক্য শুধু এপার ওপার। আর কিছুই না।
বাংলানিউজ: এবার শাকিব খানের নায়িকা হতে যাচ্ছেন...
শুভশ্রী: হ্যাঁ, শাকিব খানের সঙ্গে লন্ডনে দেখা হওয়ার পর তার নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব পাই। আশা করছি আমাদের জুটির প্রথম ছবির সব আনুষ্ঠানিকতা অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে। শাকিবের ‘শিকারি’ ছবির ট্রেলারসহ সব গান ইউটিউবে দেখেছি। তিনি দারুণ অভিনেতা। সুদর্শনও বটে।
বাংলানিউজ: যৌথ প্রযোজনার ছবিতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কাজ করলেন। দুই বাংলার এসব চলচ্চিত্রের বেলায় নানান অভিযোগ শোনা যায়। যেমন পাত্রপাত্রী, পরিচালক, সংগীতশিল্পী, চিত্রগ্রাহক সবক্ষেত্রেই কলকাতার প্রাধান্য থাকে। সেক্ষেত্রে এগুলো যৌথ প্রতারণা হয়ে যায় কি?
শুভশ্রী: আমার মনে হয়, সৃষ্টিশীল কাজ করলে সব জায়গায় একই ফল বের হয়। ছবিটির শুটিং ভারতে হলে কিংবা বাংলাদেশে হলেই যে তা ভালো হবে এমন না। শেষ পর্যন্ত সবাই দেখে কাজটি ভালো নাকি খারাপ। আমার কাজ অভিনয় করা। নায়িকা হিসেবে আমার যতোটুকু দায়িত্ব, ততোটুকুই পালন করি। যৌথ প্রতারণা হয় কি-না এ বিষয়ে একেবারেই জানি না।
বাংলানিউজ: ‘প্রেম কি বুঝিনি’ ছবিতে আপনার চরিত্রটি কেমন?
শুভশ্রী: এখানে আমার চরিত্রে বেশ বৈচিত্র আছে। সে কখনও চঞ্চল, কখনও স্থির। গল্পে দেখা যাবে- কলকাতার দুরন্ত একটি মেয়ে লন্ডনে পড়তে যায়। সেখানে বেশ সুনাম অর্জন করে সে। কলেজের একটি গম্ভীর ছেলের প্রেমে পড়ে যায় মেয়েটি। ছেলেটির মন পাওয়ার জন্য তাকে অনেক হিমশিম খেতে হয়। সে কোনোভাবেই ছেলেটিকে প্রেম কি তা বোঝাতে পারে না। এজন্যই ছবিটির নাম ‘প্রেম কি বুঝিনি’ (হাসি...)।
বাংলানিউজ: ওমের সঙ্গে রসায়ন নিয়ে বলুন।
শুভশ্রী: আমাদের রসায়ন জমানোর জন্যই প্রথম দিন থেকে ওমকে সহজ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। প্রথম দিন দেখা হওয়ার পরই বলেছি- ‘আমি তোর সিনিয়র, দেখা হলেই পা ধরে প্রণাম করবি!’ অভিনয়ে ওম খুব মনোযোগী। অল্প সময়ে পরিস্থিতি আয়ত্ত্বে নিতে পারে। মনেই হয়নি আমরা প্রথম একসঙ্গে কাজ করছি।
বাংলানিউজ: এ ছবির ‘আমি রাজি’ গানে আপনাকে অনেকবার পোশাক পাল্টাতে দেখা গেছে। এমন অভিজ্ঞতা আগে হয়েছে?
শুভশ্রী: মোট ৩৪টি পোশাক পরেছি এ গানের জন্য। এটা খুবই কষ্টসাধ্য ছিলো। তখন পায়ের ইনজুরিতে ভুগছিলাম। এতোবার পোশাক পাল্টাতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিলো। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। টানা দু’দিন ধরে ‘আমি রাজি’র চিত্রায়ন হয়। তবে গানটি প্রকাশের পর বিপুল সাড়া পেয়ে সব কষ্ট ভুলে গেছি।
বাংলানিউজ: ‘প্রেম কি বুঝিনি’ নিয়ে এখান থেকে কেমন সাড়া আশা করছেন?
শুভশ্রী: জানি বাংলাদেশে আমার জনপ্রিয়তা অাছে। ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ অনেক দর্শপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এটা দেখে বাংলাদেশের অনেকে কলকাতায় আমার সঙ্গে দেখাও করে এসেছে। আশা করছি, ‘প্রেম কি বুঝিনি’ও দর্শকরা ভালোভাবেই গ্রহণ করবে। আমি এখানে কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যেতে চাই না। একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমি কেমন তা দর্শকরাই বিচার করবে।
বাংলানিউজ: অবসর সময়ে কী করতে ভালো লাগে?
শুভশ্রী: অবসরে ঘুমাতে পছন্দ করি। একটু সময় পেলেই ঘুমাই। আমি যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠা মেয়ে, পরিবারই আমার চাঙ্গা হওয়ার উৎস। এজন্য অবসর কাটাই পরিবারের সঙ্গে। মাঝে মধ্যে রান্না করি। রান্না করতে ভালো লাগে।
বাংলানিউজ: পরিবারে আপনার ভক্ত কে?
শুভশ্রী: পরিবারের সবার উৎসাহ আছে বলেই ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। পরিবারের সবাই আমার ভক্ত। তাদের উৎসাহ আমার অভিনয়ে যথেষ্ট ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বাংলানিউজ: শুভশ্রীর ভালো ও খারাপ দিক নিয়ে বলুন।
শুভশ্রী: আমার একটা ভালো দিক হলো সবার সঙ্গে খুব সহজে মিশতে পারি। আমি সবক্ষেত্রে ইতিবাচক। খারাপ দিক হলো আমি একটু আত্মকেন্দ্রিক। নিজের মাঝে থাকতে ভালো লাগে। আমি একা থাকতে পছন্দ করি। ভীষণ রেগে গেলে কিছু বলতে পারি না। অনেক চুপচাপ হয়ে যাই। এটা আমার একটা দোষ। অনেক সময় অবশ্য এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমার মনে হয় রাগের সময় কিছু বলা উচিত। তবে কথা শুরু করলে থামি না! তখন শুধু বলতেই থাকি!
বাংলানিউজ: এবারের পূজা নিয়ে পরিকল্পনা কী?
শুভশ্রী: পূজায় অনেক মজা করা হয়। এবারও কলকাতায় আনন্দ করবো। পূজার পর ঘুরতে যাবো দেশের বাইরে।
বাংলানিউজ: বিয়ে করছেন কবে?
শুভশ্রী: (হেসে) বিয়ে কবে হবে তা ভগবানই জানেন! তিনি যেদিন ঠিক করবেন সেদিনই বিয়ে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬
জেএমএস/জেএইচ