ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বিষাক্ত খেলনার কবলে দেশের শিশুরা

নূসরাত খান, এনভায়রনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৩
বিষাক্ত খেলনার কবলে দেশের শিশুরা

ঢাকা: কোনো খেলনার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শৈশবে মা-বাবার কাছে বায়না ধরেনি এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলবে এটা যেমন স্বাভাবিক চিত্র, তেমনি খেলার ছলে খেলনাটি মাঝে মাঝে মুখে দেবে এটাও অনেকটা স্বাভাবকি।



বিপত্তি অন্যখানে। এভাবে খেলাচ্ছলে ময়লা জীবাণু পেটে ঢোকায় চিন্তত হন বাবা-মা।

কিন্তু এর চেয়েও ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে শিশুদের। শিশুরা প্রতিনিয়ত হাতে নিয়ে ঘুরছে বিভিন্ন ধাতব কিংবা প্লাস্টিকের খেলনা। বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে দিয়েছেন ভয়ানক সব তথ্য। তারা বলছনে, এসব বিষাক্ত খেলনা মস্তিষ্কে বিকৃতি ও ক্যানসারের জন্য দায়ী।

বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের খেলনায় উচ্চমাত্রার ক্ষতিকর সীসা ও বিষাক্ত কেমিকেল পাওয়া গেছে।

এসব কেমিকেল শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো’র  এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব, এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ গবেষণা প্রতিবেদনটির ফলাফল প্রকাশ করেন।    

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত আইন ও সচেতনতার অভাবে এসব বিষাক্ত খেলনা অবাধে আমদানি ও বিক্রি করা হচ্ছে, যা শিশুদের শরীরের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষা করা ৯৭ শতাংশ খেলনায় রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণ সীসা ও কেমিকলে। যেমন, ব্রোমিন, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, সর্বোচ্চ পরিমাণ সীসা পাওয়া গিয়েছে ৮৩০৫.৮ পিপিএম এবং ক্যাডমিয়াম ৪৯০.৫ পিপিএম, ক্রোমিয়াম ২৫০২.২ পিপিএম ও ব্রোমিন ৩৯২৩ পিপিএম।

এটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপদ মাত্রা থেকে বহুগুণ বেশি। পরীক্ষা করা নমুনাগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশ ব্রোমিন, ৬৫.৫ শতাংশ সীসা, ২৭.৫ শতাংশ ক্রোমিয়াম ও ২০ শতাংশ ক্যাডমিয়াম রয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যবহৃত খেলনায় রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত কেমিকেল। আর সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে প্লাস্টিকের খেলনাগুলো। শুধু স্থানীয় ব্র্যান্ড নয়, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কিছু খেলনাতেও পাওয়া যায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সীসা ও ক্রোমিয়াম।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসডোর সেক্রেটারি  জেনারেল ড. শাহরিয়ার হোসেন এবং নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা।

বাংলাদেশে পাওয়া ৪০ ধরনের খেলনাকে নমুনা হিসেবে নিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।