ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বিশালাকৃতির শিকার খেয়ে অচেতন অজগর!

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৮
বিশালাকৃতির শিকার খেয়ে অচেতন অজগর! শিকার পেটে পুরে অচেতন অজগর/ছবি: আনোয়ার হোসেন

মৌলভীবাজার: তখন নিঃশব্দের লাউয়াছড়া। চুপচাপ চারদিক। এরই একদিকে একটি ক্ষুধার্ত অজগর। অনেকক্ষণ যাবত যে একটি বড় শিকারকে টার্গেট করে নিশ্চুপ বসে আছে। হতে পারে একটি হরিণ, অথবা বুনো শূকর অথবা অন্য কোনো প্রাণী।  

সময় গড়ালো। শিকারটিকে কেন্দ্র করে অজগরটির উৎকণ্ঠা কেবল বাড়ছে।

সে মনে মনে হয়তো ভাবছে- এই বুঝি শিকারটি তার মুখছাড়া হয়ে গেলো! এই ভাবনার অস্থিরতা থেকেই হঠাৎ শিকারটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তীব্র আক্রমণ। অব্যর্থ গতি জানান দিলো অভিজ্ঞতার।  

মুহূর্তে অজগরটির মুখের গ্রাসে আটকা পড়ে গেলো শিকার। তারপর আত্মরক্ষার ছটফটানি। ততক্ষণে শিকারটি নিস্তেজ হয়ে অর্ধেক ঢুকে গেছে অজগরের পেটে।  

তারপর পেটপুরে খেয়ে মোটাপেটের অধিকারী হয়ে পড়ে রয়েছে লাউয়াছড়ার অজগরটি। এর ইংরেজি নাম Rock Python।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সম্প্রতি বনের মধ্যে টহলকালে হঠাৎ ভরাপেটের অজগরের দৃশ্যটি দেখতে পাই। একটি বিশাল আকৃতির অজগর একটি শিকার গিলে খেয়ে বেত বাগানে অনেকটা অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অজগরটিকে ভরাপেটে দেখার কিছুক্ষণ আগেই সে তার শিকারটিকে গিলেছে। অজগরটি দৈর্ঘ্য প্রায় দশ-বারো ফুট হবে। ’ 

শিকার পেটে পুরে অচেতন অজগর/ছবি: আনোয়ার হোসেনএ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, এমন একটি শিকার খেলেই তার কয়েক মাসের খোরাক হয়ে যাবে। তবে এই খাবারে অজগরটি কতদিন থাকতে পারবে এটা নির্ভর করে শিকারটির আকৃতির উপর। শিকারটি বড় আকৃতির হলে অনেকদিন প্রায় তিন-চার মাস অজগরটি না খেয়ে থাকতে পারবে। ছোট হলে হয়তো মাস দু’এক পর্যন্ত চলবে।  

‘সাপ এমনিতেই না খেয়ে দীর্ঘদিন থাকতে পারে। এটা ডিপেন্ড করে দ্বিতীয়বার আবার শিকারকে কবে, কোথায় পাবে এর উপর। তবে খুব তাড়াতাড়ি যে সে খেতে চাইবে তা নয়। একবার বড় শিকার ধরলে অজগরের কয়েক মাস চলে যায়। ’ 

খাবারের সময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অজগরের বৈশিষ্ট্য হলো সে শিকারকে প্রথমে হত্যা করবে তারপর ক্রমাগত গিলতে শুরু করবে। এই গিলে খাবার প্রক্রিয়ায় একটি বড় শিকার পেটে গিয়ে পৌঁছাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। শিকারটি ছোট হলে আরো কম সময় লাগে।

শুধু অজগরই নয়, সব সাপেরই মুখ স্থিতিস্থাপক; যার ফলে তারা তাদের চেয়ে বড় সাইজের শিকারকে হত্যা করে গিলে খেতে পারে বলে জানান ড. মনিরুল এইচ খান।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৮
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।