ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

আলম শাইন: লেখক এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষক

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২০
আলম শাইন: লেখক এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষক

মাদী কুকুরটা মারা যাওয়ার পর নিজের কনিষ্ঠ আঙ্গুলটাকে কুকুর ছানার মুখে দিয়ে চুষিয়ে ছানাটাকে বড় করেছেন। আবার টিয়া পাখির কামড়ে ডান হাতের তর্জনীর মাথাটাও হারিয়েছিলেন।

খেলার মাঠে না গিয়ে শৈশবে ঘুরে বেড়াতেন গ্রামীণ ঝোপ-জঙ্গলে। কৈশোর না পেরুতেই সুন্দরবন দর্শনের উদ্দেশে পালিয়ে যান ঘর থেকে। পাঠ্যপুস্তক রেখে গল্প-উপন্যাসের বই নিয়ে মেতে থাকতেন। জিম করবেট পড়ে তিনি হয়ে ওঠেন তুখোড় শিকারি। রাতের অন্ধকারেও শিকারে বের হতেন। শিকাররত অবস্থায় গুলিভ্রষ্ট হয়ে প্রিয় কুকুরটার চোখে গুলি লাগলে অনুশোচনায় কাতর হয়ে পড়েন। প্রতিজ্ঞা করেন, আর শিকার নয়। এবার বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করবেন, লিখে করবেন মানুষকে সচেতন। এভাবে তিনি হয়ে ওঠেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষক। এ ছাড়াও একাধারে তিনি কথা সাহিত্যিক, রম্য লেখক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।  
‘হাজাম’ সম্প্রদায় নিয়ে উপন্যাস লিখে রীতিমত হৈ-চৈ ফেলে দেন। উপন্যাসটি দৈনিক জনকণ্ঠ ও কলকাতার উদ্দালক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং উপন্যাসটি ‘ড. মঞ্জুশ্রী সাহিত্য-২০০৮’ পুরস্কারেও ভূষিত হয়। এ পর্যন্ত তিনি ১৫টি গল্প-উপন্যাস, ১৩০টি রম্যরচনা এবং হাজার খানেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার লিখেছেন। বন-বনানী-বন্যপ্রাণী-বুনোফুল নিয়ে তার লেখা উপন্যাস “বনবিহারী” বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইনে প্রতি মঙ্গলবার ধারাবাহিকভাবে ছাপা হচ্ছে।  

এ বহুমুখী প্রতিভাবান মানুষটির নাম ‘আলম শাইন’। জন্ম নিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায়। গল্প, উপন্যাস লেখার পাশাপাশি তিনি দু’হাতে লিখছেন পাখ-পাখালিদের নিয়েও। দেশের প্রথম শ্রেণির সংবাদ মাধ্যমগুলোতে তার লেখা প্রকাশ হচ্ছে নিয়মিত। পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবর্তিত ‘বোস্টন বাংলা নিউজ অ্যাওয়ার্ড-২০১৫’ ভূষিত হয়েছেন। ভূষিত হয়েছেন, ‘ক্যানভাস অব বাংলাদেশ বিজয় দিবস সম্মাননা-২০১৭’ এ। জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও জনসচেতনা বাড়াতে দেশের প্রথম গ্রিনম্যান অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ ভূষিত হয়েছেন।  

আলম শাইন দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বন্যপ্রাণী উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর। অসুস্থ পাখিদের খাঁচায় রেখে সুস্থ করে প্রকৃতিতে ডানা মেলার সুযোগ করে দেন। পাখ-পাখালির ছবি ক্যামেরাবন্দি করে পাঠকদের চিনিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেন। যার কারণে তিনি পেয়েছেন পাঠকদের প্রচুর ভালোবাসাও। শেরপুরের এক প্রকৃতিপ্রেমী আলম শাইনের নামানুসারে প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নামকরণ করেন ‘শাইন’।  

জানা যায়, আলম শাইনের ইচ্ছা একটি ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ার। যেখানে চিকিৎসা নিতে কারো ১০ টাকার টিকিটও কিনতে হবে না। এ আলোকিত মানুষটি পাখি শিকারি থেকে হয়ে উঠেছেন একজন বন্যপ্রাণী সংরক্ষক। বর্তমানে তিনি পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের তথ্য ও গবেষণা পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।