ঢাকা: সাঁতে ইচেনায় গত শুক্রবার ক্রোয়েশিয়া আর চেক রিপাবলিকের মধ্যকার ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ান সমর্থকরা মাঠে আগুনের গোলা ছুঁড়ে মারে। স্টেডিয়ামে দর্শকদের ঝামেলার জন্য ক্রোয়েশিয়াকে এক লাখ ইউরো জরিমানা দিতে হচ্ছে।
চলমান ইউরোর গ্রুপপর্বে ইংল্যান্ড-রাশিয়ার ম্যাচে দুই দলের সমর্থকদের দাঙ্গার ঘটনা ফুরাতে না ফুরাতেই গ্রুপ ‘ডি’র ম্যাচে ফের দর্শক হাঙ্গামার ঘটনা ঘটে। চলমান আসরে ক্রোয়েশিয়ানরা আবারো কোনো ঝামেলায় জড়ালে তাদের ‘হুলিগান’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে বলেও জানায় উয়েফা।
প্যারিসে এক সভা শেষে উয়েফার কন্ট্রোল, এথিক্স ও ডিসিপ্লিনারি কমিটি ক্রোয়েশিয়াকে এই শাস্তির আওতায় আনে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পরবর্তী কোনো ম্যাচে এমন ঝামেলা হলে ক্রোয়েশিয়ান সমর্থকদের কাছে আর টিকিট বিক্রি করা হবেনা। দেশটিকে তখন নিজেদের সমর্থক ছাড়াই মাঠে নামতে হবে। তবে, এর বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে ক্রোয়েশিয়ার।
সেই ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে ইভান পেরিসিকের গোলে লিড নেয় ক্রোয়েশিয়া। তার দেওয়া একমাত্র গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় দলটি। বিরতির পর আরেক ইভানের গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে ক্রোয়েশিয়ানরা। বার্সেলোনার তারকা ফুটবলার ইভান রেকিটিচের ৫৯ মিনিটের মাথায় দেওয়া গোলে ২-০তে লিড নেয় লুকা মদ্রিচ, মারিও মান্দজুকিচদের দলটি।
খেলার ৭৬ মিনিটের মাথায় একটি গোল পরিশোধ করে রিপাবলিকানরা। চেকদের হয়ে প্রথম গোলটি করেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামা মিলান জোদা (২-১)। নির্ধারিত সময়ের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে (ম্যাচের ৯২ মিনিট) আরেক বদলি খেলোয়াড় টমাস নেসিদ পেনাল্টির সুযোগ থেকে ক্রোয়েশিয়ার জালে বল জড়ান (২-২)।
নিশ্চিত জয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ক্রোয়েশিয়ানরা দেখেছে তাদের সমর্থকদের কাণ্ডকারখানা। ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে মাঠে দর্শকরা কয়েকটি আগুনের ফ্লেয়ার ছুঁড়লে ম্যাচের দায়িত্বে থাকা রেফারি মার্ক ক্লাটেনবার্গ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ রাখেন। এ সময়ে ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়রাও তাদের সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।
এদিকে, ক্রোয়েশিয়ার কোচ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবী করে জানান, জড়িতরা কোনো ক্রোয়েশিয়ান সমর্থক হতে পারেন না। তারা স্পোর্টস টেরোরিস্ট (সন্ত্রাসবাদী)। আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর এই ঘটনা আমাদের বেশ মর্মাহতও করেছে। তারা আমাদের সমর্থক হতে পারেনা। তারা রাস্তার গুণ্ডাবাহিনী। আমি নিজ চোখে দেখেছি, যারা মাঠে আগুনের গোলা ছুঁড়ছিল তাদের ৯৫ শতাংশ দর্শক অন্যদের দেখেই এমনটা করেছে। ইউরো কাপের আয়োজন নষ্ট করতে আর স্পোর্টসের মধ্যে সন্ত্রাস ঢুকিয়ে দিতেই তারা এমনটি করেছে। তারা সত্যিকার অর্থে ক্রোয়েশিয়ানদের ভালবাসে না।
এর আগে চলতি আসরে ইংল্যান্ড ও রাশিয়ার সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। লিল শহরের রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন শতাধিক ইংলিশ ও রাশিয়ান উগ্র সমর্থক। ইংল্যান্ড-রাশিয়ার পর বিতর্কের জন্ম দেয় জার্মানরা। জার্মানির সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্যারিসে ব্রাজিলের দুই সাংবাদিকের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ ও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ইংল্যান্ড-রাশিয়া ম্যাচে গ্যালারিতে রাশিয়ান দর্শকদের বিশৃঙ্খলার দায়ে কঠোর অবস্থান নেয় উয়েফা। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ইতোমধ্যেই রাশিয়াকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ২১ জুন ২০১৬
এমআরপি