ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

দায় মেটাতে পারবে তো আর্জেন্টিনা?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৬
দায় মেটাতে পারবে তো আর্জেন্টিনা?

ঢাকা: ফুটবল বিশ্বে আর্জেন্টিনা একটি বহুল উচ্চারিত দেশের নাম।   আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গনে সব সময়ের ফেভারিট দেশের নাম আর্জেন্টিনা।

ফুটবল  ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনার দেশ আর্জেন্টিনা, ম্যাজিক বয় মেসির দেশ আর্জেন্টিনা।
 
বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কিংবা আন্তর্জাতিক ফুটবলের যে কোনো আসরে আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস, স্নায়ুক্ষয়, চায়ের টেবিলে উত্তাপ।
 
আর্জেন্টিনা নামটির সাথে কেমন যেন এক যাদুকরী ছোঁয়া আছে। যে ছোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে ফুটবল দুনিয়ার কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী। সেটা নিশ্চয়ই অকারণে নয়। জন্মলগ্ন থেকেই আর্জেন্টাইনরা যে যাদুকরী এক একটি খেলা উপহার দিয়ে আসছে, তাতেই ভক্তরা এমন বুঁদ হয়ে থাকেন।
 
কী এমন যাদু আছে আর্জেন্টিনার ফুটবলে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমরা যদি দেশটির বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার ফলাফল দেখি তাহলে হয়তো অনেকটাই স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।
 
১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসর বসেছিল উরুগুয়েতে।   আর সেই প্রথম আসরেই রানার আপ আর্জেন্টিনা। দুঃখজনক হলেও একথা সত্য যে ১৯৩০ সালের পর বিশ্বকাপ ফুটবলের ৯টি আসরে বিশ্বকাপের দৃশ্যপট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এরমধ্যে ১৯৩৮, ১৯৫০, ১৯৫৪ ও ১৯৭০  এই চার আসরে দেশটি অংশই নেয়নি। ১৯৭৪ বিশ্বকাপ দিয়ে আবার বিশ্বকাপে যোগ দেয়।
 
বিশ্বকাপে যোগ দেয়ার ঠিক এক আসর পরেই দেখা পায় শিরোপার।
 
১৯৭৮ সালের নিজেদের প্রথেম শিরোপার পর ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ৩-২ গোলে জয় নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপার দেখা পায় ম্যারাডোনারা।
 
ওই শেষ। এরপর বিশ্বকাপে আর কোনো শিরোপার দেখা পায়নি সব সময়ের ফেভারিট এই দলটি।   তবে ১৯৯০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে রানার আপ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলো।
 
এবার আসা যাক কোপা আমেরিকার আলোচনায়। একথা সর্বজনবিদীত যে বিশ্বকাপের পরেই বিশ্বফুটবলের জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে কোপা আমেরিকা। ফুটবলে আর্ট বলতে যা বুঝায় তার পুরোটুকুই নিহিত দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের খেলায়।
 
আর এই দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ৪৪ বারের মধ্যে আর্জেন্টিনা তাদের শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছে ১৪বার। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের এই লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা শেষ শিরোপা জিতেছিল ১৯৯৩ সালে।  
 
কোপা আমেরিকার এবারের শতবর্ষী আসরে মেসির আর্জেন্টিনার মিশন শুরু হয়েছিল ৭ জুন চিলির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। যেখানে চিলিকে ২-১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল ১৪ বারের কোপা জয়ীরা। দ্বিতীয় ম্যাচে মেসির হ্যাটট্রিকে পানামাকে ৫-০তে আর তৃতীয়টিতে বলিভিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে উঠে শেষ আটে। জিলেট স্টেডিয়ামে শেষ আটের লড়াইয়ে ভেনিজুয়েলাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় আলবিসিলেস্তারা। আর সেমির লড়াইয়ে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে উঠেছে টুর্নামেন্টের ফাইনালে।
 
কোপা আমেরিকার এবারের ফাইনাল চিলির বিপক্ষে। এই ম্যাচটি শুরু হবে ২৭ জুন বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায়।   আর এবারের এই শিরোপা লড়াইয়ে জিততে একরকম আটঘাট বেধেই মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা।
 
আর সেটা যদি তারা করে দেখাতে না পারে, তাহলে হয়তো দলের সাথে সাথে ভক্ত সমর্থকদেরও আক্ষেপের শেষ থাকবে না। অনেকটা পেয়ে হারানোর বেদনায় নিমজ্জিত  হতে হবে কোপার গেল আসরের মতো। গত আসরে স্বাগতিক চিলির কাছে পেনাল্টি শুটে হেরেছিল মেসিরা। পুরো টুর্নামেন্ট দুর্দান্ত খেলে শিরোপা হারিয়ে কেঁদে মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে। আর আগে যা দেখা গিয়েছিল গেল বিশ্বকাপেও।
 
ফলে এবারের কোপার আসরে শিরোপা জয়ের মিশনে মেসি, হিগুয়েইনরা মাঠে নামবেন গেল ২৩ বছরের দায় মেটাতে।   এখন দেখার বিষয় হলো প্রায় দুই যুগের এই দায় তারা মেটাতে পারেন কী না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০১২ ঘণ্টা, ২৬ জুন ২০১৬
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।