ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের উপস্থিতিতে বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে অশান্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের উপস্থিতিতে বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে অশান্তি

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে অশান্তি হলো। বিক্ষোভ দেখালো বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক শিক্ষার্থীরা।

 

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই বিষয়টি নিয়েই শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়ায়।

এদিনই এই বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, আমন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ বিশিষ্টরা। তাদের উপস্থিতিতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সাবেক শিক্ষার্থীরা।

সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ। গোটা বিশ্ববিদ্যালয় কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। এখানেই বাঁধে বিপত্তি। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে অনুষ্ঠানে সাবেকদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়েই নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। শেষমেশ তাদের ব্যাগ, মোবাইল রেখে অনুষ্ঠানে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কেনো আগে জানানো হয়নি এই অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

তবে শান্তিনিকেতনে অশান্তি শুরু হয়েছে গতকাল থেকেই। দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শান্তিনিকেতনে গেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে সঙ্গীতভবনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিবেশিত ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ নাটকটি দেখেন তিনি। বিশ্বভারতীর ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ঠিক করেছিল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী যখন নাটক দেখবে তখন তার কিছুটা দূরে রতনপল্লীতে প্রদর্শিত হবে বিবিসি তৈরি তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’।

কিন্তু দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর শান্তিনিকেতন সফরের মধ্যেই বিশ্বভারতীর স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে গুজরাট দাঙ্গা সংক্রান্ত নিষিদ্ধ এই তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করার ঘোষণা দেওয়ার পরই ঘুম ছুটে যায় রাজ্য প্রশাসনের। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। অন্যদিকে, একসঙ্গে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপস্থিতি, তারইমধ্যে নিষিদ্ধ তথ্যচিত্র প্রদর্শনের সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে যায়। অবশেষে বিশাল পুলিশবাহিনী ও বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে বন্ধ করে দেওয়া হয় তথ্যচিত্রের প্রদর্শন।

বিশ্বভারতীর ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সদস্য শুভনাথ বলেন, আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম তথ্যচিত্রটি দেখাব। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ আমাদের দেখাতে দিল না। যাতে না দেখাই তারজন্য প্রথমে বহুভাবে চাপ সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ আর বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা একপ্রকার জোর করে তথ্যচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়। তার অভিমত, আসলে সত্য সামনে চলে আসবে, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের পাশপাশি রাজ্য প্রশাসনের এত মাথা ব্যথা। তবে আমরাও হাল ছাড়ব না। পরবর্তীতে আবার দিন ঠিক করে এই তথ্যচিত্র দেখাব।

অপরদিকে, এদিন সকালেই সমাবর্ত অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যাল প্রাঙ্গণজুড়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবিতে পোস্টার দেখা যায়। ‘ভিসি তুমি দূর হঠো-বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গো-ব্যাক’ বাংলা এবং ইংরেজিতে লেখা ছিল ওই পোস্টারগুলো। তবে কে বা কারা পোস্টারগুলি লাগিয়েছিল তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।