ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে মমতার পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে মমতার পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় ভারতে সুপ্রিমকোর্টে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ছিল দ্বিতীয় শুনানি। এদিনও আদালতে বিচারকের ক্ষোভের মুখে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পুলিশ।

 

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি ‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ’ স্লোগানে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু করেছে। এদিন স্বাস্থ্য ভবন ঘেরাও অভিযানে পুলিশের সাথে চলে নেতাকর্মীদের চরম ধস্তাধস্তি।

শুধু বিজেপি নয়, আন্দোলনে জোড় বাড়াচ্ছে বাম কংগ্রেসসহ সব রাজনৈতিক দল। পথে নেমেছেন বাংলার আইনজীবী, অভিনেতা, চিকিৎসক থেকে সাধারণ সবাই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের  সাংসদ ও বিধায়করা।

বিগত কয়েকদিনে আন্দোলনের জেরে কলকাতার জনজীবন স্তব্ধ। একপ্রকার বেহাল অবস্থা সরকারি হাসপাতালগুলোর। এর জেরে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে মমতার সরকার।  

সম্প্রতি দোষীদের ফাঁসির দাবিতে নানা মিটিং মিছিলে মুখ্যমন্ত্রী সহ শাসকদলের লোকজনকে পথে দেখা গেলও, এখন তারা পথে নামছেন না। অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদের। আর এসব দেখে পশ্চিমবঙ্গবাসীর ক্ষোভ যেন আরও বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা মিছিল নিয়ে রওনা দেন স্বাস্থ্য ভবনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু অনেক আগেই ব্যারিকেড তৈরি করে রাখে পুলিশ। উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কায় আগে থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন ছিল স্বাস্থ্য ভবন যাওয়ার পথে।

বিজেপির প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু, অধিকারী রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষসহ অন্য নেতা-নেত্রীরা। সেই মিছিল সল্টলেক করুণাময়ী যেতেই বাধা দেয় পুলিশ। এরপর পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে অনেক বিজেপি কর্মী স্বাস্থ্য ভবনের দিকে যেতে শুরু করেন।  

পুলিশ বাধা দিতেই শুরু ধস্তাধস্তি। দীর্ঘক্ষণ সেই উত্তেজনায় স্তব্ধ হয়ে যায় সল্টলেক। একে একে নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেখান থেকেই সভাপতি সুকান্ত ঘোষণা দেন, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র থানা ঘেরাও কর্মসূচি নেবে বিজেপি।

অপরদিকে, এদিনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। শুনানির একপর্যায়ে বিচারককে বলতে শোনা যায়, অবাক হচ্ছি, আগেই বলে দেওয়া হলো অস্বাভাবিক মৃত্যু! কীভাবে সম্ভব? তাহলে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন কি ছিল? আর যখন পুলিশ বুঝতেই পেরেছিল এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু, কেন তাহলে প্রথমে আত্মহত্যা বলা হলো? এর কোন উত্তর দিতে পারেননি রাজ্য সরকারের আইনজীবী।  

এরপরই বিচারক রাজ্য সরকারের আইনজীবী কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলকে বলেন, পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যের কোনো দায়িত্বশীল পুলিশকে আনবেন। আমরা যে প্রশ্ন করব, যেন সঠিক উত্তর দেয়।  

এরপরই বিচারক তদন্তের দায়িত্ব থাকা সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, প্রাথমিক তদন্তে কী উঠে এসেছে? উত্তরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জানায়, তারা একটি  প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।  

তবে ঘটনার পাঁচ দিন পরে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে সিবিআই। সংস্থাটির পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, অনেক প্রমাণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ পাঁচ দিনে অনেক কিছু বদলে গেছে। এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ সেপ্টেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।