ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বিরোধীদের দাবি মমতার পদত্যাগ, মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত ওসব বাংলাদেশেই হয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
বিরোধীদের দাবি মমতার পদত্যাগ, মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত ওসব বাংলাদেশেই হয়

কলকাতা: কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় সোমবারও (৮ সেপ্টেম্বর) উত্তাল ছিল সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ। এই ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন নাগরিক, চিকিৎসক সমাজ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ জনগণ।

'দফা এক দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ'- এই দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে বিজেপি। বামেরা চেয়েছে স্বাস্থ্য এবং পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগ। যে যাই-ই দাবি করুক না কেনো, আসলে সকলে চাইছে মমতা অপসারণ। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি পুলিশ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইভাবে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজার অভিযান চলছে কমবেশি প্রায় প্রতিদিন। এমন পরিস্থিতিত রোববার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক আইএএস কর্মকর্তা জহর সরকার।

এই বিষয়ে বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী আবার রাজ্য সরকারকে গন্ডারের চামড়ার সাথে তুলনা করে কটাক্ষ করে বলেছেন, 'এই সরকারের চামড়া এতটাই মোটা যে, কোন আঘাত, মান, অপমান স্পর্শ করছে না। ' কেউ কেউ আবার এই আন্দোলনকে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের সাথে তুলনা টেনেছেন।

কিন্তু এরাজ্যে যে সেই পরিস্থিতি একেবারেই সম্ভব নয়, তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এই ইস্যুতেই আমি কোনো অ্যাকশানে যেতে চাই না। সংযত আছি। এটা বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশেই বাংলাদেশ হয়।

তিনি নিজেও নন, এমনকি এই মুহূর্তে বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবর্তে রাজ্যের মানুষকে আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসবে মেতে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। সোমবার রাজ্যের প্রসাশাসনিক ভবন থেকে মমতা বলেছেন, একমাস অনেক হল। এবার উৎসবে মাতুন।  

যদিও এই কথাটি রাজ্যবাসী ভালোভাবে নেয়নি। কারণ চিকিৎসক হত্যার একমাস হলেও বিচার পায়নি নির্যাতিতার পরিবার। গত এক মাসে অভয়া( নাম পরিবর্তত) বাংলার প্রতিটা ঘরের মেয়ে হেয়ে উঠেছে। ফলে মুখ্যমন্ত্রী এমন শব্দচয়ন খুব ভালোভাবে নেয়নি রাজ্যবাসী।

মমতার কথা আরও তিক্ত করে তুলেছে অভয়ার মা। তিনি বলেছেন, ওনারও তো ভাতিজা আছে। তার বউ, মেয়ে আছে। তার পরিবারে যদি এটা ঘটত, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারতেন, ‘অনেক তো হল। এবার উৎসবে মাতুন। ’ এর আগেও মমতার এক মন্তব্যে অভয়ার মা বলেছিলে, ওনার তো সন্তান নেই। তাই সন্তানহারা দুঃখ বুঝবেন না। ফলে রাজ্য সরকারের এই বেফাস মন্তব্য যেমন কেউ ভালো ভাবে নিচ্ছে না। যার জেরে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণের।

তবে মমতা নিশ্চিত বাংলাদেশের মতন তার সরকারের পতন হবে না। কারণ ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো অনুযায়ী, নির্বাচিত সরকার ফেলা সহজ নয়। তাই যেন মাঝেমধ্যে একটু বেশি সুড় চড়াচ্ছেন নেত্রী। তবে ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। তখন মানুষ কি রায় দেবে তা সময় বলবে। তবে শাসক দল মনে করছে, এখনও দেড় বছর। ফলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার সময় পাওয়া যাবে। বর্তমান পরিস্থিতি সামালে ওঠাই মূল চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।