ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

শিশুদের দুধ খাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৫
শিশুদের দুধ খাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা?

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে বহুদিন ধরেই। নতুন করে আরেকটি অভিযোগ উঠেছে যেখানে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে শত শত মানুষকে গোপন আটক কেন্দ্রগুলোয় আটক করা হয়েছিল।

সেখানে বেশ কয়েকজন শিশু ছিল। হাসিনার শাসনামলে তাদের দুধ খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনার শাসনকালে জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিশন এ তথ্য প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড

মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হাসিনা। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের। গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে শত শত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আরও শত শত লোককে অবৈধভাবে অপহরণ এবং গুমের অভিযোগ উঠেছে।

তদন্ত কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টিআরটির খবরে বলা হয়েছে, অন্তত অর্ধ ডজন শিশু তাদের মায়ের সঙ্গে মাসের পর মাস গোপন জেলে ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিশুদের ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের দুধ খাওয়ার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এমন তথ্য দিয়েছে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন। এতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

কমিশন জানায়, মায়েদের সঙ্গে শিশুদের গুম হওয়ার একাধিক নিশ্চিত ঘটনা আমরা পেয়েছি। যার মধ্যে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ২০২৩ সালেও ঘটেছে। একটি নির্দিষ্ট ঘটনায়, এক গর্ভবতী নারীকে তার দুই শিশুসন্তানসহ আটক করা হয় এবং তাকে একটি আটক কেন্দ্রে মারধর করা হয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

কমিশন জানিয়েছে, এক সাক্ষী তদন্তকারীদের তার শৈশবে মায়ের সঙ্গে আটক অবস্থায় থাকার রুমটি দেখিয়েছেন, যা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছিল। ওই শিশুর মা আর কখনো বাড়ি ফেরেননি। অন্য এক ঘটনায়, এক দম্পতি ও তাদের শিশুকে আটক করা হয়। শিশুটিকে মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত করে বাবাকে মানসিকভাবে চাপ দেওয়ার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ক্ষমতায় থাকাকালীন হাসিনার সরকার জোরপূর্বক গুমের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। তারা দাবি করেছিল, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় ভূমধ্যসাগরে ডুবে গিয়েছে। কমিশন জানায়, নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা অপহৃত প্রায় ২০০ বাংলাদেশি এখনও নিখোঁজ।

কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কিছু ভুক্তভোগী নির্দিষ্টভাবে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো অফিসারদের সনাক্ত করতে না পারলেও তাদের সাক্ষ্য ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে চিহ্নিত করা হবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বাহিনীর কমান্ডারদের দায়ী করার সুপারিশ করব।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের ওপর এর প্রভাব ছিল বহুমুখী। যার মধ্যে রয়েছে গুরুতর মানসিক আঘাত, আইনি এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জ, বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।