ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

যে কারণে গ্রামীণ কল্যাণের ৬৬৬ কোটি টাকা করের রায় প্রত্যাহার হলো

স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
যে কারণে গ্রামীণ কল্যাণের ৬৬৬ কোটি টাকা করের রায় প্রত্যাহার হলো

ঢাকা: পাঁচ করবর্ষের বিপরীতে ৬৬৬ কোটি টাকা প্রদেয় কর দাবি নিয়ে কর কমিশনারের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণের করা পৃথক রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

আগস্টের ৪ তারিখ দেওয়া ওই রায় প্রত্যাহার করে নিয়েছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।

কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই বেঞ্চে কনিষ্ঠ বিচারক এক সময় এসব মামলায় সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাই রায়টি প্রত্যাহার করে মামলার নথি প্রধান বিচারপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছেন গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।  

উল্লেখ্য, গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পুনর্মূল্যায়নের পর ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ —এই করবর্ষের জন্য গ্রামীণ কল্যাণের কাছে প্রদেয় কর দাবি নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণ ২০১৭ সালে পৃথক রিট করে।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে এনবিআর গত বছর পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। গত ১১ মার্চ আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে মূল বিষয়বস্তুর ওপর শুনানির নির্দেশ দেন। সে অনুসারে শুনানি শেষে ৪ আগস্ট রুল খারিজ করে রায় দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ।

রায়ের পর তখন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি জানিয়েছিলেন, পাঁচটি করবর্ষের জন্য গ্রামীণ কল্যাণের কাছে কর বাবদ ৬৬৬ কোটি টাকা দাবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। রিট দুটি খারিজ হওয়ায় আয়কর বাবদ গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায় করতে পারবে এনবিআর।

তবে গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার কথা জানিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ৪ আগস্ট রুল খারিজ করে দিলেন। এরপর ৮ আগস্ট এটা আবার কার্যতালিকায় আসলো রিকল (রায় প্রত্যাহার) করার জন্য। ২৯ আগস্ট এসে রিকল করলেন। রিকল করার যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন- সেকেন্ড জাজ এই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। সরকারের পক্ষে এই মামলায় প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। সুতরাং এ রায় ডিফেকটিভ থাকবে। তাই রিকল করে আদেশ দিলেন এবং পুনরায় কোর্ট নির্ধারণ করার জন্য মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠালেন।

তিনি আরও বলেন, এই মামলাটা এই জজ ছয় মাস যাবৎ শুনলেন। সেকেন্ড জাজও জানেন তিনি সরকারপক্ষে আইনজীবী ছিলেন। এখন উনি বিচারক। উনি শুনতে পারেন না। এটা কোর্টও জানেন। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন এখানে হয়রানিগ্রস্থ হলাম। রায়ও দিলেন। এটা আমাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। জনগণের কাছে একটা ভুল মেসেজ গিয়েছে।

এখন প্রধান বিচারপতি কোর্ট নির্ধারণ করে দিবেন। সেখানে রুলটার নতুন করে শুনানি হবে বলে জানান এই আইনজীবী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৪
ইএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।