রোববার (২৫ মার্চ) শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৭ মার্চ দিন ঠিক করেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ।
আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।
শুনানিতে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে বিজিএমইএ’র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকি বলেন, মৃত্যুদণ্ডের আসামিও শেষ আবেদন করে থাকে। আমরাও শেষ সুযোগ চাচ্ছি। এরপর আদালত আদেশের জন্য ২৭ মার্চ দিন ঠিক করেন।
এর আগে বহুতল ভবন ভাঙতে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে।
গত বছরের ৮ অক্টোবর বহুতল ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে সাত মাস সময় দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ওইদিন আদালতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বিজিএমইএ’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম।
শনিবার (২৪ মার্চ) ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেছিলেন, আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ আবেদনের ওপর রোববার শুনানি হবে।
গত বছর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মার্চ ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে ছয়মাসের সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
ওই সময় শেষ হওয়ায় একই বছরের ২৩ আগস্ট আরও এক বছর সময় চেয়ে এ আবেদন জানিয়েছিলো বিজিএমইএ। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৮ অক্টোবর সাত মাস সময় দেন আপিল বিভাগ। পরে এ সময় শেষ হওয়ার আগেই ফের এক বছর সময় চেয়েছে বিজিএমইএ।
১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ০৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওইদিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন।
পরদিন ০৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
২০১১ সালের ০৩এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।
একই বছরের ০৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে হাইকোর্টের রায় ছয়মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ০২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়।
পরে একই বছরের ০৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন জানায় বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ০৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে- তা ০৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে ভবন ভাঙার রায় বহাল ও ভবন ভাঙতে ছয়মাস সময় দেন। পরবর্তীতে আরও একদফা সাত মাস সময় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
ইএস/এসএইচ