জীবনের সব রং যখন হারিয়ে যায়, সুখের দাম্পত্য রূপ নেয় সহিংসতায়, তখন অনেকেরই বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাই চলে যায়। ঠিক এমনটাই হয়েছিল কলম্বিয়ার অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের।
নিজের অশান্তির সংসার ছাড়লেও বিশ্ব সংসার তাকে ছাড়েনি। তার সেই মরে যাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয়নি দীর্ঘ দুই বছরে। কীভাবে! সাগরে ঝাঁপ দেওয়ার দুই বছর পর মাঝসমুদ্রে ভাসমান কলম্বিয়ার সম্প্রতি ওই নারীকে উদ্ধার করেন মৎস্যজীবী রোলান্ডো ভিসবাল ও তার এক বন্ধু। এভাবেও বেঁচে ফেরা যায়।
উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যেই তার জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান জানান তার জীবনের গল্প। ৪৬ বছরের অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের প্রায় ২০ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক । কিন্তু প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই সম্পর্ক উষ্ণতা হারায়। মারধর শুরু হয়। তাতেও সংসার চলছিল। দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হন। অশান্তি করেই সন্তানদের নিয়ে দিন কাটাতেন তারা। কিন্তু একটা সময় আর ধৈর্য রাখতে পারেননি। বাধ্য হয়ে একবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। তবে থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অত্যাচার আরও বাড়ে। মারধর করে হাত–পা ভেঙে দেওয়া হয় অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের।
মারধর যেন সহ্য হচ্ছিল না। একসময় বেঁচে থাকার ইচ্ছাও হারিয়েছিলেন, সাংসারিক অশান্তি সহ্য করতে না পেরে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন তিনি।
উদ্ধারের পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, মাঝে দু’বছর অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের কোনো খোঁজ ছিল না।
সংবাদ মাধ্যমকে রোলান্ডো জানান, ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করেন, সেখানে দেখা যায়, একজন মাঝসমুদ্রে ভেসে যাচ্ছেন। তখনই মৎস্যজীবীরা অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানকে উদ্ধার করেন।
উদ্ধারের সময় তিনি অজ্ঞান ছিলেন। তাকে উদ্ধারের কিছুক্ষণ পরই জ্ঞান ফিরে পেয়ে নিজের দাম্পত্য অশান্তির কথা জানান তিনি। এরপর তার বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আপাতত তার কাছেই রয়েছেন অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান। উদ্ধারের পর তিনি প্রথমেই বলেছেন, ‘আমি আবার জন্মালাম। সৃষ্টিকর্তা চাননি আমি মরে যাই। ’
মাকে নিজেদের কাছে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের দুই মেয়ে।
বাংলাদেশ সময় ১০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
এসআইএস