ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাবিতে মাহবুবুল হক শাকিলকে স্মরণ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
ঢাবিতে মাহবুবুল হক শাকিলকে স্মরণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুল হক শাকিলকে ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় মাহবুবুল হক শাকিল সংসদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মাহবুবুল হক শাকিল সংসদের আহ্বায়ক ও কবি ওসমান গণির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, শাকিলের স্ত্রী গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলুফার আনজুম, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ শাকিলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ছাত্র রাজনীতির নক্ষত্র শাকিলের পরিবারের সঙ্গে আমাদের প্রায় ৭০ বছরের পুরনো ঘনিষ্ঠতা। তাই তাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। আজকে তার জন্মদিনে সে আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই। তার স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

তিনি বলেন, শাকিলা এমন একজন ছাত্রনেতা ছিল যে লিখতো ভালো, বক্তৃতা দিতো ভালো এবং আদর্শের পূজারি ছিল। মৃত্যুর পর অন্যের দ্বারা স্মরণীয় হওয়া মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। শাকিলের সাথে যে মানুষজন ঘনিষ্ঠ হয়েছিল, পদচারণা ছিল তারা সবাই গভীর কষ্ট পেয়েছে শাকিলের বিদায়ে।

সভাপতির বক্তব্যে ওসমান গণি বলেন, শাকিল জীবনের শেষের দিকে এসে সাহিত্য রচনার প্রতি বেশ ঝুঁকে পড়েন। প্রকাশকদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল ছিলেন শাকিল। বিরল প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তি শাকিল একদিকে আমাদের সাথে গল্প করতেন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের জন্য বক্তব্য লিখতেন। তিনি এত তাড়াতাড়ি যে আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন, আমরা কোনোদিন ভাবিনি।

গোলাম কুদ্দুস বলেন, ছাত্র রাজনীতির মূর্ত প্রতীক মাহাবুবুল হক শাকিলের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা ও উচ্চমান সম্পন্ন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিলেন। শাকিলের আরেকটি বড় গুণ হলো, তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনের সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের একটা সেতুবন্ধন তৈরি করেছিলেন। সরকারের সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের যোগাযোগ রক্ষা করতে শাকিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার শিশুসুলভ সাদামাটা জীবন সবাইকে আকর্ষণ করত। আজকে তার জন্মদিনে তিনি নেই, তা যতই অনুভব করি ততই খারাপ লাগে।

শাকিলের স্ত্রী সভাপতি নিলুফার আনজুম বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করি না শাকিল আমাদের মাঝে নেই। শাকিল যখন ছিল তখন বেশির ভাগ সময় কাজের কারণে বাইরে থাকত। যখনই তার কথা মনে পড়ে আমি চিন্তা করি, হয়তো বাইরে আছে অথবা ঢাকার বাইরে, দেশের বাইরে থাকলেইবা ক্ষতি কী। কবি শাকিল, ছাত্রনেতা শাকিল, অতিরিক্ত সচিব শাকিল; আপনারা যে যেভাবেই তাকে চেনেন না কেন সে থাকবে আজীবন আমাদের মাঝে।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাহবুবুল হক শাকিল ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইতে বঙ্গবন্ধু যে মানুষের সাথে সম্পৃক্ততার কথা বলেছিলেন, সেই মানুষের সাথে সম্পৃক্ততার গুণটাই ছিল মাহবুবুল হক শাকিলের মাঝে। সামরিক সরকারের সময়ে তিনি রাজনীতি করেছেন। তিনি তৎকালীন এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সদস্য ছিলেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এই সব পদপদবির বাইরে এসে শাকিল ভাই মানুষের সাথে মিশে যেতেন ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা দিয়ে। গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম নেপথ্যের কারিগর শাকিল ভাইয়ের চলাফেরা, কর্মনিষ্ঠা, নিজের মধ্যে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে নিজেকে ক্রমাগতভাবে গড়া, সততা ও আনন্দের সাথে কাজ করার জন্য সকল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
এসকেবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।