বরিশাল: সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া খালের ওপর নির্মিত বক্স কালভার্টটি প্রায় তিন বছর ধরে ধসে পড়ে রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ও পার্শ্ববর্তী বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা।
ধসে পড়া কালভার্টটি অপসারণ না করা এবং দীর্ঘদিনেও নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ না করায় জনদুর্ভোগ ক্রমেই প্রকট আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে ধসে পড়া কালভার্টের ওপর কাঠ বিছিয়ে চলাচল করতে গিয়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দ্রুত কালভার্টটি অপসারণ করে নতুন করে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ১২ বছর আগে বক্স কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। ২০২০ সালে বন্যার পানির চাপে কালভার্টের দুই পাশে সড়কের মাটি সরে যায়। ২০২১ সালে বন্যার পানির তোড়ে বক্স কালভার্টটি ধসে খালে পড়ে যায়। পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র কালভার্টটি ধসে পড়ায় চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
কয়েক বছর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও এলজিইডির সহযোগিতায় ধসে পড়া কালর্ভাটের ওপর কাঠ বিছিয়ে দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে কাঠের তৈরি বিকল্প সেতুর মাঝখানেও ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিন থেকে বিকল্প সেতুর ওপর দিয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও এখন জনসাধারণের চলাচলও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এছাড়াও বিকল্প কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ মোটরসাইকেল চালকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, এ রুটে চলাচল করছেন চরকাউয়াসহ পশ্চিম চরাদি, রানীরহাট, হলতাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা শহর থেকে সময়মতো সার-বীজ ও কীটনাশক সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাঁধে বহন করে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল মিয়া জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ বক্স কালভার্টটি ধসে পড়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ১১৩ নং চরকাউয়া মাতৃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকাউয়া আহমদিয়া সিনিয়র ফাজিল ও ডিগ্রি মাদ্রাসা, তোফায়েল আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, জেলা শহরের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ ধসে পড়া কালর্ভাটের ওপর নির্মিত বিকল্প কাঠের সেতু দিয়ে প্রতিদিন বিভাগীয় শহরে আসা-যাওয়া করেন। ঝুঁকিপূর্ণ এই কালভার্ট নির্মাণ হলে চরকাউয়া ইউনিয়নসহ আশেপাশের পাঁচ গ্রামের বাসিন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেবে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের বন্যায় বক্স কালভার্টটি খালের মধ্যে ধসে পড়ার পর আমরা কাঠের তৈরি একটি বিকল্প সেতু নির্মাণ করে দিয়েছি। ধসে পড়া বক্স কালর্ভাট অপসারণ করে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
এসএম/এমজেএফ