ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মশা নিধনের পদ্ধতিতে ভুল, বুঝলেন মেয়র আতিক    

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
মশা নিধনের পদ্ধতিতে ভুল, বুঝলেন মেয়র আতিক     যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ামিতে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম

ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন  ‘আমরা এতদিন ভুল পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। তাতে মশা তো ধ্বংস হয়নি।

বরং অর্থের অপচয় হয়েছে। ’ 

যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি শহরে গিয়ে মশা নিধন কার্যক্রম দেখে এই উপলব্ধি হয়েছে ডিএনসিসি মেয়রের।  

শনিবার ( ২১ জানুয়ারি) এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি কর্মসূচির আওতায় দেশটি সফর করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিনিধিদল। ওই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মেয়র আতিকুল।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মিয়ামি শহরে ফিল্ড ভিজিট ও কর্মশালায় মশকনিধনের তথ্য ও উপাত্ত তুলে ধরা হয়।  

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে মশা নিধন কার্যক্রমের নানা দিক শিখিয়ে দেন মিয়ামি ডেড কাউন্টি কর্তৃপক্ষের বিশেষজ্ঞরা।  

এতে সহায়তা করেন দেশটির কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বিভাগের ব্যবস্থাপক উসিক উনলু ও পরিচালক উইলিয়াম ডি পেট্রি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মশা নিধনে মিয়ামি শহর থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগাতে চান মেয়র আতিকুল ইসলাম।  

তিনি বলেছেন, দ্রুত ঢাকা উত্তর সিটিতে মশার প্রজাতি চিহ্নিত করার জন্য একটি পরীক্ষাগার স্থাপন করবেন। মিয়ামি থেকে যে জ্ঞান অর্জন হয়েছে, এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটিকে মশামুক্ত রাখতে চান।

আতিকুল ইসলাম বলেন, দেশে ফিরে মিয়ামি শহরে দায়িত্বরত সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করবেন। তারা (মিয়ামির কর্মকর্তারা) কীভাবে সফল হলেন, ঢাকায় সেটা কীভাবে প্রয়োগ করা যায়—তখন এর কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে।

মেয়র বলেন, প্রয়োজনে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের পরীক্ষাগারেই মশার জীবনপ্রকৃতি নির্ণয়ে কাজ করা যেতে পারে। আর ফগিংয়ে (পরিপক্ব মশা নিধনে ধোঁয়া ছিটানো) অর্থ অপচয় না করে লার্ভিসাইডিংয়ে (লার্ভা নিধনে ওষুধ ছিটানো) মনোযোগী হতে হবে।

তিনি বলেন, ‘মিয়ামি আর ঢাকার আবহাওয়া এবং মশার ধরন একই। তাই তারা সফল হলে অবশ্যই আমরাও সফল হব। এখন আর পিছিয়ে থাকার সময় নেই। উন্নত দেশের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারলে ঢাকাকেও মশামুক্ত করা সম্ভব। ’

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কমার্শিয়াল ল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (সিএলডিপি) আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে ঢাকা উত্তর সিটির এই প্রতিনিধিদল ফ্লোরিডা সফরে রয়েছে।  

বিবৃতিতে জানানো হয়, কর্মশালায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মিয়ামি শহরে প্রায় ৫২ প্রজাতির মশার অস্তিত্ব রয়েছে। ফলে সারা বছরই সেখানে মশাবাহিত রোগ—ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।  

এ ছাড়া ঢাকার আবহাওয়ার সঙ্গে ফ্লোরিডা রাজ্যের মিয়ামির ডেড কাউন্টির বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা গড়ে ১৫-৩৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করে, মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতও হয়ে থাকে। তাই মশাবাহিত রোগের উর্বর ক্ষেত্র হতে পারত মিয়ামি।  

কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মশাবাহিত রোগ পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে মিয়ামির ডেড কাউন্টি কর্তৃপক্ষ।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রথমে তারা মশার প্রজননস্থল খুঁজে বের করতে একটি দলকে দায়িত্ব দেয়। তারা খুঁজে খুঁজে মশার প্রজননস্থল থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা ও মশার ডিম সংগ্রহ করে। পরীক্ষাগার বিশেষজ্ঞরা মশা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে প্রজাতি নির্ধারণ করে দেন। এটি প্রথম ধাপ।  
পরে মশার প্রজাতি অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিধনের কাজ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ফগিংকে গুরুত্ব না দিয়ে লার্ভিসাইডিংকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাদের মশক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার মোট বাজেটের ৮০ শতাংশই খরচ হয় লার্ভিসাইডিংয়ে। মিয়ামি কর্তৃপক্ষ বলছে, ফগিং পুরোনো পদ্ধতি, এটা দিয়ে কখনো মশা মরে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
এমএমআই/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।