ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে মানবপাচার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট| | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে মানবপাচার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) গ্লোবাল রিপোর্ট অন ট্রাফিকিং ইন পারসন ২০২২ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান। ছবি: রাজন চৌধুরী

ঢাকা: প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মানবপাচারের ঘটনা বাড়ছে। বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা থেকে প্রতিনয়ত মানবপাচারের ঘটনা দেখা যায়।

বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তের মধ্যবর্তী এলাকায় সুন্দরবন অবস্থিত, আর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের প্রত্যক্ষ সাক্ষী সুন্দরবন।  

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানী বনানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) গ্লোবাল রিপোর্ট অন ট্রাফিকিং ইন পারসন ২০২২ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিনিয়ত বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবন এলাকার ফসল এবং সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ২০১৪ সালে সেখানের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নিয়ে আসে। জোরপূর্বক ও বাধ্যতামূলক শ্রম এই এলাকার মৎস্য আহরণের কাজে দেখা গেছে। যার ফলে প্রায়ই এসব এলাকায় শিশুদের কাজে বাধ্য করা হতো। সংঘবদ্ধ চক্র এ সুযোগের ফায়দা নিয়ে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের শোষণ করছে। এতে করে , সংঘবদ্ধ অপরাধীরা ব্যাপক আকারে এসব এলাকার মানুষকে বিদেশে কাজের কথা বলে প্রলুব্ধ করে। দেশে এবং বিদেশে এ চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করে, যার ফলে দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে যারা ঢাকা কিংবা কলকাতায় যায়, তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।  

এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রথমবারের মতো গত ২০ বছরে মানবপাচারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে, কারণ মহামারির কারণে পাচারকারীদের অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। মহামারির মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক যৌন শোষণের ঘটনা ঘটেছে। পাচারের শিকার ব্যাক্তির নিজেকে বাঁচানোর প্রতি বেশি উদ্ধত ছিল কারণ মহামারির সময় উদ্ধার কাজে সীমাবদ্ধতা ছিল। মানবপাচারের ঘটনায় মামলার বিচার কাজ মহামারির কারণে কমে গিয়েছিল, যার ফলে মানবপাচারের সম্ভাব্য ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল নিজ দেশে। যুদ্ধ এবং সংঘাত পাচারকারীদের সুযোগ করে দেয়। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মানবপাচারের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয় ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৭৩০টি মানবপাচারের ঘটনা ঘটেছিল, যা ২০১৭ সালে ছিল ৭৭৮ এবং ২০১৮ সালে ৫৬১টি।          

অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের মূল অংশ তুলে ধরেন জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর মাহদি হাসান। এ সময় আরও প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান এবং ইউএনওডিসি’র সদর দফতরের গ্লোবাল কোঅর্ডিনেটর এইমি কমরি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা জানান, মানবপাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটিকে বৈশ্বিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে।

আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) চিফ অব মিশন আবুসসাত্তার এসভ, ইউএনওডিসি’র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্কো টেইজেরিয়া, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের হেড অব কোঅপারেশন মওরিও যিয়ান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) তৌফিক ইসলাম শাতিল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আলম শেখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এমএমআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।