ঢাকা: রাজধানীর মানিকনগরের ৪৯ নং ওয়ার্ডের (সিটি পল্লীতে) ৯৯ বছরের চুক্তিতে ভাসমান জনগোষ্ঠীর বসবাসের অনুমিতি দিয়েছিল তৎকালীন এরশাদ সরকার। তবে ৩২ বছর পেরোতেই বস্তি কেরানিগঞ্জে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
সিটি কর্পোরেশন বস্তি খালি করতে দিয়েছে সাত দিনের নোটিশ। এমন নোটিশে বিপাকে পড়েছেন সে এলাকার বস্তিবাসীরা। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বস্তিবাসীরা।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, ৪৯ নং ওয়ার্ডএর সিটি পল্লীর বাসিন্দাদের চলতি মাসের ০২ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদের ঘোষণা দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি বস্তি উচ্ছেদ করা হবে। তাই ৯ তারিখের মধ্যে বিস্তিবাসীদের এলাকাটি ছেড়ে দিতে বলা হয়।
৪৯ নং ওয়ার্ডের ইউনিট আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে দেখা করেছি। আমাদের এই সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি মেয়র বলেছেন কেরানিগঞ্জে আমাদের বাসস্থান তৈরি করে পুনর্বাসন করবেন। কিন্তু আমরা তো ৪০ বছর আগেই পুনর্বাসিত হয়ে এখানে (৪৯ নং ওয়ার্ডে) এসেছি। আমাদের কাছে দলিল আছে, ১৯৯০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদ আমাদের এই জায়গাগুলো দলিল করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা এখন কেরানীগঞ্জ যেতে চাই না। আমাদের যেখানে জন্ম হয়েছে এই জায়গায় আমরা থাকতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা যেখানে থাকি এই জায়গাটা যদি সরকারের প্রয়োজন হয় সরকার এটা নেবে। এতে আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের জন্ম যে এলাকা বা জায়গায় সে এলাকার আশেপাশে বহুতল ভবন নির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হোক। আমি মনে করি এতে সরকারের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।
তিনি আরও বলেন, এই ৪৯ নং ওয়ার্ডের সরকারি ১৭ একর খাস জমি রয়েছে৷ আমাদের যদি সরকার বা কোনো এনজিও-এর পক্ষ থেকে এক একর জমির মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয় তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে।
৪৯ নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা মো. হৃদয় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বস্তির বেশিরভাগই কেউ রিক্সা চালায় কেউ মাটি কাটে কেউ আবার দিনমজুরের কাজ করে। ১৯৯০ সালে এরশাদ আমাদের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের এই জায়গাটি (ঢাকা সিটি পল্লী) বরাদ্দ করে দিয়েছিলেন। তখন ৯৯ বছরের চুক্তি ছিল আমাদের সঙ্গে সরকারের। কিন্তু এখন ৩২ বছর যেতে না যেতেই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এই জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।
৪৯ নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, নগর ভবন থেকে কয়েকজন এসে মাইকিং করে আমাদের বলছে এটা নাকি সরকারি জায়গা তারা এই জায়গায় গ্যারেজ বরাদ্দ দেবেন। এখন ৯ তারিখের মধ্যে আমরা যদি এই জায়গা খালি না করি, তাহলে আমাদের সব কিছু তারা জব্দ করে নেবেন। আমরা এখন এই অল্প সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় যাব? আমরা চাই, আমাদের যেন এই এলাকায়ই পুনর্বাসন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
ইএসএস/এসআইএস