লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে চলছে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা মেলা। এতে সার্কাস, ভূতের বাড়ি, নাগর দোলা, জাদু প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০ দিনের জন্য আয়োজন করা হলেও মেলা চলছে মাসব্যাপী। মেলায় বিনোদনের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য।
তবে ১০ দিন শেষ হওয়ার পরেও নতুন করে মাসব্যাপী উদ্যোক্তা মেলার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মো. মাকছুদুর রহমান।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে বিসিকের উদ্যোগে ‘উদ্যোক্তা মেলা’ গত ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু করা হয়। ১০ দিন পর ৩০ জানুয়ারি পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মেলা।
কিন্তু বাস্তবে ১০ দিনের মেলা এখনো শেষ হয়নি। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা মেলায় কোনো উদ্যোক্তা কিংবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের দেখা না মিললেও ‘মনতা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ ও ‘পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক)’ স্টলের দেখা মেলে। পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা মেলার নাম দিয়ে চলছে বাণিজ্য।
আর মনতা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মালিক মামুন জানান, সাত লাখ টাকা খরচ করে সার্কাস এনেছেন মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য। মাসব্যাপী এ মেলা তিনি কন্ট্রাক্টে এনেছেন।
এদিকে মেলায় আসা গাড়ি পাকিংয়ের জন্য ২০ টাকা ও প্রবেশের জন্য ২০ টাকা গুণতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের নামে এ মেলা হলেও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কিছুই দেখা যায়নি মেলায়। মেলার মূলফটকে পুলিশ বক্স থাকলেও এর পাশেই সার্কাসে চলে অশ্লীল নাচ, প্রবেশ ফি ২০ টাকা মাইকিং করে আদায় করাসহ নানা কার্যক্রম। মেলার ভেতরে মূলফটকের মুখেই রয়েছে পুনাকের স্টল।
স্থানীয়রা বলছেন, মনে হয় পুলিশি প্রহরায় চলছে মেলার কার্যক্রম।
দর্শনার্থীদের অনেকে জানান, মেলাটিকে অনেকে পুনাক মেলা, আবার কেউ কেউ উদ্যোক্তা মেলা হিসেবে জানেন।
সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের কাঠ ব্যবসায়ী নুর আলম বলেন, পরিবার নিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা মেলায় গিয়েছিলাম। কিন্তু ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কোনো পণ্যই পাইনি। ২০ টাকা গাড়ি পার্কিং ফি ও প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে মেলায় ঢুকে ভেতরে আবার ভূতের বাড়ি ৫০ টাকা দিয়ে ও ৫০ টাকা দিয়ে যাদু দেখতে যাই। পরে জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে টিকেট কেটে সার্কাসে গিয়ে দেখি অশ্লীল নাচ আর অশোভন কথার ছড়াছড়ি। যা বাচ্চাদের নিয়ে দেখার মতো নয়। তাই বাধ্য হয়ে সার্কাস না দেখে বাড়ি চলে আসি।
এছাড়া মেলায় আগত উঠতি বয়সী মেয়েদের নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। তবুও টনক নড়ছে না প্রশাসনের।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) উপ-ব্যবস্থাপক মো. মাকছুদুর রহমান বলেন, ১০ দিনব্যাপী উদ্যোক্তা মেলা শেষ হয়েছে ৩০ জানুয়ারি। তবে এখন যে মেলা চলছে, তা ডিসি (জেলা প্রশাসক) জানেন।
চেম্বার অব কমার্স লক্ষ্মীপুরের সভাপতি এম মাসুদ আলম জানান, এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে। এ মেলা কারা করেছে, তিনি কিছুই জানেন না। প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, জানা নেই।
এদিকে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, মেলাটি বিসিকের উদ্যোগে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৩
এসআই