সিরাজগঞ্জ: নিজেকে এমবিবিএস (সার্জারি) পরিচয় দিয়ে আহমেদ সুমন (২৩) নামে এক যুবকের পায়ের আঙুল কেটে ফেলেছেন সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় মো. মাসুদুর রহমান (৩৮)। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে আহমেদ সুমন বাদী হয়ে মাসুদুর রহমানকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। মাসুদুর রহমান শহরের গয়লা মহল্লার মৃত রহমানের ছেলে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী শহরের মিরপুর দক্ষিণ মহল্লার সাহেব আলীর ছেলে আহমেদ সুমন বলেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বাই সাইকেলের সঙ্গে দুর্ঘটনায় বাম পায়ের তৃতীয় আঙুলে আঘাত পাই। আঙুল দিয়ে রক্ত ঝরার কারণে বন্ধুরা আমাকে দ্রুত নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গেলে ওয়ার্ড বয় মাসুদুর রহমান নিজেকে এমবিবিএস (সার্জারি) পরিচয় দিয়ে আঙুলটির অবস্থা খারাপ এবং জরুরি অপারেশন করার কথা বলেন। ওইদিন তিনি জরুরি বিভাগের বেডে শুইয়ে অপারেশনের মাধ্যমে আঘাতপ্রাপ্ত আঙুলটি কেটে ফেলেন। হাসপাতাল থেকে চলে আসার পর থেকেই পায়ের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস বাড়িতে শয্যাশায়ী থেকে চিকিৎসা নেন আহমেদ সুমন। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, মাসুদুর রহমান একজন ওয়ার্ড বয়। অন্যান্য চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে জানা গেছে তার পায়ের আঙুল কেটে ফেলার মতো কোনো সমস্যা ছিল না। ওয়ার্ড বয় মাসুদুর রহমান ডাক্তারের ভুয়া পরিচয়ে তার অঙ্গহানি করেছে। এ ঘটনায় তিনি সোমবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করেন।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরই নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অফিস এক্সিকিউটিভ মোত্তালিব হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় পায়ের আঙুল ঝুলছিল আহমেদ সুমন নামে ওই রোগীর। সেদিন চিকিৎসক না থাকায় মাসুদুর রহমান নামে ওয়ার্ড বয় তাকে অপারেশনের মাধ্যমে আঙুল কেটে ফেলেছে বলে শুনেছি। এ কারণেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তবে ওয়ার্ড বয় হয়ে কিভাবে অপারেশন করলেন বিষয়টি তার জানা নেই বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
আরএ