ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মোবাইলফোন ব্যবহার করায় ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
মোবাইলফোন ব্যবহার করায় ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক আহত ছাত্র।

বরিশাল: মোবাইলফোন ব্যবহার করায় মো. হাসিবুর রহমান নামের এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এতে ওই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহতের ভাই মো. মনির হোসেন।



আহত হাসিবুর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর দেহেরগতি গ্রামের কৃষক আবু সালাম হাওলাদারের ছেলে।

হাসিবুর বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ তেমাথা এলাকায় অবস্থিত তাহফিজুল মিল্লাত ক্যাডেট মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।

ওই মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে পেটানোর ঘটনা ঘটে।

আহতের ভাই মনির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মাদ্রাসায় মোবাইলফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ। ভাই মাদ্রাসায় একটি মোবাইলফোন নিয়ে যায়। মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম ফোনটি জমা নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে থাকেন। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাবা ফোনটি ফেরত আনতে মাদ্রাসায় যান। তাকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে ফোনসেটটি ফেরত দেননি।

মনিরের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাই হাসিবুরকে মাদ্রাসার সিঁড়ির কাছে দেখতে পেয়ে বকাবকি করেন মাদ্রাসার পরিচালক শফিকুল ইসলাম। একপর্যায়ে হাসিবুরকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেছেন মাদ্রাসার পরিচালক শফিকুল ইসলাম। পরে হাসিবুরকে মাদ্রাসায় আটকে রাখেন তিনি। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর অসুস্থ অবস্থায় হাসিবুর বাড়িতে আসে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শনিবার হাসিবুরকে চিকিৎসা করিয়ে বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউপির দুই নম্বর ওয়ার্ড বাবুর বাড়ি এলাকার মামা বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়েছে।

মনির বলেন, আমার ভাইয়ের কাছে মোবাইলফোন পাওয়া গেছে, সেটা তো আমাদের জানাতে পারতেন। এভাবে পেটালেন কেন।

বিষয়টি জানতে চাইলে পরিচালক তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চাননি।  

এ ঘটনায় তার মামাতো ভাই কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষেদের (ইউপি) দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুমন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ইউপি সদস্য মো. সুমন মীর বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তবে তাকে গ্রেফতার করতে পারেননি।

কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিক জানান, অভিযোগ পেয়ে মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু হুজুরকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলফোনে কথা হয়েছে। তিনি মাহফিলে আছেন। পরে যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি তিনি।

শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম মোবাইলফোনে জানান, বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে গতরাতে এবং আজ সকাল এ নিয়ে হাসিবুরের পরিবার ও থানা পুলিশের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

মাদ্রাসার পরিচালক বলেন, বিষয়টি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা। এজন্য আমিসহ সবাই দুঃখ প্রকাশ করছি। মূলত এই ছেলেটি পাঁচ বছর ধরে এখানে পড়ছে, কখনো কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়নি। তবে সবশেষ সে ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরও মাদ্রাসায় মোবাইলফোন নিয়ে আসে। মেয়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা, ভিডিও দেখা, রাতে অন্যদের ঘুম থেকে উঠিয়ে একসঙ্গে ভিডিও দেখাসহ নানান ঘটনা ঘটাচ্ছিল। আমরা চাচ্ছিলাম ছেলেটা লেখাপড়ায় যেহেতু ভালো তাই তাকে গাইড দেওয়ার। তাকে ভালো করার সর্বোচ্চ ট্রাই করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।