ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে কেজি দরে বিক্রি হবে ১২ উড়োজাহাজ! 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে কেজি দরে বিক্রি হবে ১২ উড়োজাহাজ!  ফাইল ফটো

ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে অন্তত ১২টি উড়োজাহাজ। প্রায় ১ দশকের বেশি সময় পড়ে থাকা এসব উড়োজাহাজের ফ্লাইট অপারেশন এখন পুরোপুরি বন্ধ।

পরিত্যক্ত এসব উড়োজাহাজ সরিয়ে নিতে কয়েক দফা চিঠি পাঠিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।  

কোনো সাড়া না পেয়ে বছরখানেক আগে নিলামের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তখন কয়েকজন মালিক বকেয়া পরিশোধে ছয় মাসের সময় চান। ছয় মাস পরে তাদের আর কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দীর্ঘদিন বিমানবন্দরের রফতানি কার্গো-ভিলেজের বিশাল জায়গাজুড়ে উড়োজাহাজগুলো পড়ে আছে।

এর মধ্যে আটটি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দুটি, জিএমজি এয়ারলাইনসের একটি ও এভিয়েনা এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, এসব উড়োজাহাজের পার্কিং এবং সারচার্জ বাবদ বেবিচকের কাছে পাওনা প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বকেয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে। প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩৬০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বেবিচকের। ২০১২ সালে জিএমজি এয়ারলাইনস তাদের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করে। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছ থেকে বকেয়ার পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় রিজেন্ট। তার আগেই বেশ কয়েকটি রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল সংস্থাটি। এর বাইরে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ কর্তৃপক্ষের কাছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বকেয়া ১৯০ কোটি টাকা। পাশাপাশি পরিত্যক্ত প্লেনগুলোর দখল করে নেওয়া জায়গায় কমপক্ষে ৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে, যা থেকে প্রাপ্য অর্থ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বেবিচক।

আর তাই উড়োজাহাজগুলো এবার নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক। নিলাম করতে পারলে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ বকেয়া টাকা যেমন উসুল হবে, তেমনি পার্কিংয়ের জন্য জায়গাও ফাঁকা হবে। তবে নিলামে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে প্রয়োজনে উড়োজাহাজগুলো কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানগুলোর রেজিস্ট্রেশন আগেই বাতিল করেছে বেবিচক। এরপর বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজ সরিয়ে নিতে দফায় দফায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বছরখানেক আগে বকেয়া আদায়ে উড়োজাহাজগুলো নিলামে বিক্রির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তখন কয়েকজন মালিক বকেয়া পরিশোধে ছয় মাস সময় চেয়েছিলেন। সেই সময় পার হলেও তাদের দেখা নেই। এজন্য ফের নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা চলছে। শিগগির এ নিলামের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে নিতে আমরা অনেক বার চিঠি দিয়েছি। তবে উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জবাব দেয়নি। তাদের কাছে পাওনা অর্থও পরিশোধ করেনি। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। এখন সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী- পরিত্যক্ত উড়োজাহাজগুলো বাজেয়াপ্ত করে দ্রুত নিলাম আয়োজন করা হবে।

নিলামের প্রস্তুতির বিষয়ে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, নিলামের প্রক্রিয়া নির্ধারণে কর্মপদ্ধতি ও সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আইনি মতামত নিয়ে ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। আশা করি, থার্ড টার্মিনাল চালু হওয়ার আগেই নিলাম সম্পন্ন করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
এমকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।