ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসের ইচ্ছা ইন্দোনেশিয়ার সেই তরুণীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসের ইচ্ছা ইন্দোনেশিয়ার সেই তরুণীর

পটুয়াখালী: জেলার বাউফলের ইমরান হোসেনের (২৫) প্রেমের টানে সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক নিকা উল ফিয়া (২৩)। দুজন ভিন্ন ভাষাভাষীর ও ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষকে এক করেছে ভার্চ্যুয়াল প্রেম।

হাজার হাজার কিলোমিটার দূর ও নানা অমিল থাকা সত্ত্বেও ভালোবাসার টানে বিয়ে করেছেন তারা। দেশি বর ও বিদেশি কনেকে এক নজর দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।

বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খাজুর বাড়িয়া গ্রামের বাবা দেলোয়ার হোসেন ও মা বীথী আকতারের দুই ছেলের মধ্যে বড় হলেন ইমরান হোসেন। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। নিকি ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া প্রদেশের জেম্বার এলাকার বাসিন্দা ইউলিয়ানতোর মেয়ে। তার মায়ের নাম শ্রী আনি।

ইন্দোনেশিয়ার কন্যা নিকি উল ফিয়া বাউফলে আসার বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আশপাশের লোকজন ভিনদেশি বউ দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন। তবে ভাষা বুজতে পারছেন না কেউ। ‌ স্বামী ইমরান ভাষান্তর করে সবাইকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

জানা যায় যে, ২০১৬ সালে ফেসবুকে ইন্দোনেশিয়ার মেয়ে নিকির সঙ্গে পরিচয় হয় ইমরানের। প্রথমে বন্ধুত্ব হলেও, পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ইমরানের বাউফলের বাড়িতে এসেছিলেন নিকি। কিন্তু তার বয়স ২১ বছর না হওয়ায় সে বার বিয়ে করতে পারেননি। ফিরে যান নিজ দেশে।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলাদেশে আবার আসেন নিকি উল ফিয়া। ইমরান তাকে পটুয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে যান। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে তারা যান বাউফলে। বুধবার (১ মার্চ) রাতে স্থানীয় কাজির উপস্থিতিতে ১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন ইমরান-নিকি। আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। ইমরানের পরিবার ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করলেও উৎসুক জনতার আগমনে কানায় কানায় পরিপূর্ণ বিয়ে বাড়ি।

ইমরানের বন্ধু মো. মাছুম বিল্লাহ বলেন, গতকাল বিকেলে ইমরানের বাড়িতে এসেছি। আজ বিয়ের আনুষ্ঠিকতা চলছে। চারদিক থেকে মানুষজন এসেছেন নতুন বউ দেখার জন্য।

বর ইমরান হোসেন বলেন, নিজস্ব আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে খুবই ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। বাড়িতে গতকাল থেকে অনেক মানুষ এসেছেন নতুন বউ দেখার জন্য।

নিকি উল ফিয়া বলেন, বাংলাদেশে এসে তার খুবই ভালো লাগছে। এখানকার খাবার ও সংস্কৃতি তার খুব পছন্দ হয়েছে। বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করার ইচ্ছা আছে তার।

দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রেম ভালোবাসা যুগের পর যুগ থেকে চলে এসেছে। গতকাল রাতে তারা ১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। আজ বিয়ের শেষ পর্ব। স্বাভাবিকভাবে দূর-দূরান্তের মানুষ এমনিতেই আসবে যেহেতু কনে ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছেন। আমি তাদের দুজনের জন্য অনেক দোয়া করি।

আরও পড়ুন: ৬ বছর পর কেন আবার বাংলাদেশে সেই ইন্দোনেশিয়ান তরুণী?

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।