ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এসএসসি পাস যুবকের মেডিকেল কলেজ ভর্তি বাণিজ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসএসসি পাস যুবকের মেডিকেল কলেজ ভর্তি বাণিজ্য

ঢাকা: এসএসসি পাস এসএম আনিসের কর্মজীবন শুরু হয় পাটকলে। এরপর গার্মেন্টসে কাজ নেন তিনি।

২০১০ সাল থেকে ঢাকার ফার্মগেটে ছাত্র-ছাত্রীর হোস্টেল, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি ফরম কেনাবেচা শুরু করেন। পরবর্তীতে নিজেই ‘ফ্রেন্ডস অ্যাডমিশন কনসালটেন্ট’ নামে প্রতিষ্ঠান চালু করে দেশি ও সার্কভুক্ত বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের মেডিকেল কলেজে ভর্তির ব্যবসা শুরু করেন।

মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছাড়াও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় দালালি ও প্রতারণা করতেন তিনি। এর মাধ্যমে দুটি হোটেল ও মনিপুরী পাড়ায় একটি বিলাসবহুল ফ্লাট গড়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মনিপুরীপাড়া এলাকা থেকে আনিসকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার কাছ থেকে চলমান এমবিবিএস পরীক্ষার বেশকিছু প্রবেশপত্র, পূর্ববর্তী এমবিবিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের শতাধিক চেক, পুলিশ কনস্টেবল পদপ্রার্থীর প্রবেশপত্র, বিভিন্ন লিখিত ও অলিখিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, একাধিক প্যাড, পাঁচটি স্ট্যাম্প-সিল এবং একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আনিসের কাছে চলমান এমবিবিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সক্ষমতা ছিল না। কিন্তু সে এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নানা প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছিল।

এসএসসি পাস করে আনিস কিছুদিন পিপলস জুট মিলে কাজ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে ডাইংয়ের কাজ করে। ২০১০-১২ সাল থেকে সে ফার্মগেট ও গ্রিন রোডে ছাত্র-ছাত্রীর হোস্টেল, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি ফরম কেনাবেচা শুরু করে। সেই সূত্রে ‘নিজ এডুকেশন’ নামে একটি কনসালটেন্সি ফার্মের স্বত্বাধিকারী জাহিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে নিজেই ফ্রেন্ডস অ্যাডমিশন কনসালটেন্ট নামে একটি কনসালটেন্সি ফার্ম খোলে। সিটি করপোরেশন থেকে মুদি দোকানের মতো ব্যবসার লাইসেন্স নিয়ে শুরু করে দেশি ও সার্কভুক্ত বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেল কলেজে ভর্তি বাণিজ্য।

আনিসের দালালি ও প্রতারণা সম্পর্কে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, সে নিজের প্রতিষ্ঠানের প্যাডে বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদেরকে সিট সংরক্ষণের জন্য চিঠি লিখতো। পাশাপাশি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের লোকদের ও মন্ত্রণালয়ের দুয়েক জন অসাধু ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে দিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের নামে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।

তার সঙ্গে জড়িত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কোচিং সেন্টারের কারা মিলে এ অপকর্ম চালিয়ে আসছে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান হারুন।

মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছাড়াও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় দালালি বা প্রতারণা বাণিজ্য করে আনিস ইতোমধ্যে দুটি হোটেল ও মনিপুরী পাড়ায় একটি বিলাসবহুল ফ্লাটের মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
পিএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।