ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নোয়াখালীতে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন

চার লাখ টাকা চুক্তিতে হত্যা, গ্রেফতার ৮ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
চার লাখ টাকা চুক্তিতে হত্যা, গ্রেফতার ৮  অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিম: ফাইল ফটো

নোয়াখালী: নোয়াখালী সদর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার ও রোববার (১১-১২ মার্চ) বিকেলে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো. মমিন উল্যার ছেলে মো. মহিন (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আনোয়ারুল হক নশুর ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির শাহজাহানের ছেলে রিপু মিয়া (২১), আক্কাস সওদাগর বাড়ির আক্কাস সওদাগরের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মাহফুজের বাপের বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকান বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে মমিন উল্যাহ (৩৭) ও পাটোয়ারী বাড়ির অজি উল্যার ছেলে নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)।  
 
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমের শক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। পরিকল্পনাকারী শক্রতার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আব্দুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আব্দুল হাকিমের সিএনজি অটোরিকশার মালিক মহিনকে ব্যবহার করা হয়। ঘটনার দিন রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি)  পরিকল্পনা হিসেবে মহিম তার বাড়িতে কামাল, রিপু, মোমেন, নূর আলমসহ আরও কয়েকজনকে (তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না) নিয়ে অবস্থান করে। মহিন আব্দুল হাকিমকে অটোরিকশা রাখার কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেয়।

এরপর হাকিম অটোরিকশা জমা দেওয়ার সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অজ্ঞাত নামা আরও ৪-৫জন মিলে তার মুখ বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে সব আসামিরা হাকিমকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ রাস্তার পূর্ব পাশে ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির পেছনের ডগির ভেতরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করে।

গ্রেফতার রিপু ও অপর একজন (নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না) মরদেহ গোপন করার জন্য শাবল, কোদাল ও বস্তা নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সব আসামিরা মিলে মৃত্যু নিশ্চিতের পর হাকিমের মরদেহ বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দেয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, তদন্তকালে আসামি সোহেলের ভাষ্যমতে আসামি রিপুর বাড়ি থেকে শাবল ও কোদাল উদ্ধার করা হয়।  মূল পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামি মহিমের সঙ্গে ৪ লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন।  

এছাড়া তিনি জানান, আসামি রিপু ও সোহেল ওরফে শাকিল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। শনিবার ও রোববার বিকেলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।