ঢাকা, রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লালমনিরহাটে চৈত্র মাসের বৃষ্টিতে ডুবলো বোরো ধান

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
লালমনিরহাটে চৈত্র মাসের বৃষ্টিতে ডুবলো বোরো ধান

লালমনিরহাট: চৈত্র মাসের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে লালমনিরহাটের খাল, বিল, পুকুর ও বোরো ধানসহ ফসলি জমি। স্বস্তির বৃষ্টি হলেও ভুট্টা ও তামাক চাষিদের কপাল পোড়ার শঙ্কা।


মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দিনভর জেলার আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। মাঝে মধ্যে সুর্য উঁকি দিলেও ঠাণ্ডা অনুভুত হয়েছে।

জানা গেছে, প্রকৃতিতে চৈত্র মাস মানেই প্রচণ্ড তাপদাহ আর ধুলোয় ধূসরের রূপ। এ মাসে পানির অভাবে মাঠ ফেঁটে চৌচির হয়। চৈত্র মাসের বাতাসে বয়ে যাওয়া লু হাওয়া ও প্রচণ্ড তাপদাহে প্রাণিকুল অতিষ্ট হয়ে পড়ে। সেই চৈত্র মাসে প্রকৃতিতে নেমেছে আষাঢ়ের অবিরাম বর্ষণ।  

সোমবার দিনগত রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত হয় তিস্তা ধরলা ও সানিয়াজান নদী বেষ্টিত জেলা লালমনিরহাটে। এ বৃষ্টিতে জেলার খাল বিল ও পুকুর ডুবে গেছে। অনেক নিচু এলাকার বোরো ধান ক্ষেতও ডুবে গেছে চৈত্র মাসের এ ভারি বৃষ্টিতে।

তাপদাহের চৈত্র মাসের এ বৃষ্টি স্বস্তির হলেও কৃষিতে কোনো কোনো ফসলের জন্য ক্ষতির কারণও হয়েছে। অসময়ের এ বৃষ্টিতে ভুট্টা ও তামাক ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। পানি জমে থাকা ভুট্টা ক্ষেতে গাছ মরে যাওয়ার শঙ্কা করছেন কৃষকরা।  

এদিকে এ বৃষ্টিতে পানি জমে থাকায় তামাক ক্ষেতও পচে নষ্ট হতে পারে বলে চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এছাড়াও অসময়ের এ বৃষ্টি রবি মৌসুমের বিভিন্ন সবজি ক্ষেতেও কিছুটা ক্ষতি করেছে বলে কৃষকদের দাবি।

তবে চৈত্র মাসের এ বৃষ্টি নিচু জমির ক্ষতির কারণ হলেও উঁচু জমির জন্য আশির্বাদ বলে মনে করছেন চাষিরা। এ বৃষ্টির কারণে বাসা বাড়িতে চালু হওয়া ফ্যান বন্ধ করে শীতের কাপড় জড়াতে হচ্ছে জেলার মানুষদের শরীরে। প্রকৃতিতে যেন নতুন করে শীত নামতে শুরু করেছে। বাইরে বের হলেই শীতের কাপড় জড়িয়ে বেড়াতে হচ্ছে। গরম থেকে হঠাৎ ঠাণ্ডা অনুভূতি আর এ বৃষ্টিতে সর্দ্দি কাশি ও জ্বরের প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

দুর্গাপুরের বৃদ্ধ কৃষক ইউসুব আলী বলেন, চৈত্র মাসে গরমে থাকা যায় না। ধুলোর জন্য বাইরে যাওয়া দুস্কর হয়। অথচ এ বছর সেই চৈত্র মাসের এক রাতের বৃষ্টিতে খাল বিল পুকুর ডোবা সব ডুবে গেছে। নিচু জমির বোরো ধানও ডুবে গেছে। আমার জীবনে চৈত্র মাসে এমন ভারি বৃষ্টি দেখিনি।

কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, উঁচু জমির বোরো ধানের কিছুটা উপকার হলেও এ বৃষ্টি ভুট্টা তামাক ও নিচু জমির ফসলের ক্ষতি করেছে। অনেক চেষ্টা করেও দুই বিঘা জমির ভুট্টা ক্ষেতে জমে থাকা পানি অপসারণ করতে পারিনি। গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে ভুট্টা গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

লালমনিরহাটের পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার ডিমলা কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, ডিমলা ও তার আশপাশের এলাকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।