ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়ায় যুবককে মারধরের চার মাস পর মৃত্যু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
কুষ্টিয়ায় যুবককে মারধরের চার মাস পর মৃত্যু 

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর বোয়ালদাহ গ্রামে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাফি আলী (২৫) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিহতের চাচা ও চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে সাফির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চার মাস আগে মারধরের ঘটনায় গুরুতর আহত সহকারী নির্মাণ শ্রমিক সাফি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই ভুগছিলেন মস্তিষ্ক ও স্পাইনে আঘাত জনিত ক্ষত নিয়ে।

সাফি আলী উপজেলার ১ নম্বর হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদাহ নদীরকুল এলাকার বাসিন্দা মানসিক প্রতিবন্ধী মতিয়ার রহমানের একমাত্র কর্মক্ষম ছেলে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. হোসেন ইমাম বলেন, সোমবার সকালে সাফি নামে এক যুবককে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চার মাস আগে এই রোগী হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো।  

নিহতের মা বেবি খাতুনের (৪৫) অভিযোগ, বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে আমার ভাসুর কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলেদের হুকুম দিয়ে আমার পরিবারের লোকজনকে মারধর ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। এরই জেরে গত বছরের ২০ নভেম্বর সকালে আমার ছেলে সাফিকে কামাল হোসেনের চার ছেলে যথাক্রমে তোফাজ্জেল (৩৫), তুষার (৩০), সুজন (২৫), মোফাজ্জেলরা (২২) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কামাল হোসেনের বাড়িতে হাত পা বেঁধে রড বাটাম লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। আমরা উপায়ান্ত না পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের সাহায্য চায়। পরে মডেল থানার দারোগা জিন্নাহ এসে গুরুতর আহত অজ্ঞান অবস্থায় সাফিকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এসে সাফি এতোদিন ধরে নিস্তেজ অবস্থায় ভুগছিলো। অভাবের সংসারের ওর প্রয়োজনীয় ওষুধও খাওয়াতে পারিনি। সাফি ছিল আমার পরিবারের উপার্জনক্ষম ছেলে। আমার পরিবারে দুবেলা ঠিকমতো খাবারই জোটে না, ওষুধ কিনবো কি করে ? চার মাস আগে সাফিকে মারধরের ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলাও করেছি। কিন্তু সেই মামলায় কোনো আসামিকে পুলিশ ধরেনি।

এ ব্যাপারে জানতে হুকুমদাতা কামাল হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপুলিশ পরিদর্শক জিন্নাহ আহমেদ জানান, গত নভেম্বর মাসে বোয়ালদাহ মেছোপাড়া এলাকার কামাল হোসেনের বাড়ি থেকে সাফি নামে এক যুবককে হাত পা বেঁধে মারধর করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জ্ঞানশুন্য ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। ওই ঘটনায় মারধরে অভিযোগে সাফির মা বেবি খাতুন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছিলেন। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন আছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন খাঁন জানান, সোমবার সকালে বোয়ালদাহ গ্রামে সাফি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যারাই এ ঘটনায় জড়িত থাকুক তাদের গ্রেফতার করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।