ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যেসব সরকারি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
যেসব সরকারি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস’

ঢাকা: সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা কর্মঘণ্টার পর নিজস্ব হাসপাতালের চেম্বারেই ব্যক্তিগতভাবে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখতে পারবেন। এই কার্যক্রমকে বলা হচ্ছে ইন্সটিটিউশনাল (প্রাতিষ্ঠানিক) প্র্যাকটিস।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম।

প্রথম অবস্থায় দেশের ১২টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানেই সরকার নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিজিটের বিনিময়ে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস করবেন। দেশের মানুষ এই সেবায় সন্তুষ্ট হলে, খুব দ্রুত পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালেই এমন ব্যবস্থা চালু করা হবে।

বুধবার (২৯ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিভাগের ১০ জেলায় এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল, ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

চট্টগ্রামের বিভাগের আট জেলায় প্রথম পর্যায়ে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এবং পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে আছে- নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল, সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

খুলনা বিভাগের মধ্যে আছে- ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রংপুর বিভাগের মধ্যে- ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ এবং গংগাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

বরিশাল বিভাগে- ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল, চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সেবা দেওয়া হবে।

সিলেট বিভাগের হাসপাতালগুলোর মধ্যে আছে- সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোপালগঞ্জ এবং বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার মধ্যে- জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

এদিন রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ইনশাআল্লাহ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বেলা ৩টা থেকে দেশের প্রায় ৫০টি সরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যমান সরকারি স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি "বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত" সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন এবং বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করাবেন।

তিনি আরও বলেন, আগে যেখানে বিকেলে বা সন্ধ্যায় চিকিৎসা নিতে মানুষকে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিকে সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হতো, এখন প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট করা হাসপাতালগুলোতে দুপুরের পরও নামমাত্র ফি দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের রোগী দেখানো যাবে। চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন লাখ লাখ সাধারণ মানুষ।

ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিসে একজন অধ্যাপকের ভিজিট হবে ৫০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক পাবেন ৪০০ টাকা। চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ হবে ৫০ টাকা। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালটেন্টের ফি হবে ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালটেন্ট পাবেন ৩০০ টাকা, সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ কাটা হবে ৫০ টাকা।

সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট অথবা পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রিধারীদের ভিজিট হবে ৩০০ টাকা। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পাবেন ২০০ টাকা, সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ কাটা হবে ৫০ টাকা।

এমবিবিএস বা বিডিএস ও সমমানের চিকিৎসকদের ফি হবে ২০০ টাকা। এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পাবেন ১৫০ টাকা। সহযোগিরা পাবেন ২৫ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ২৫ টাকা।

ডুয়েল প্রাকটিস চালু রেখে, ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিস কতটা সফল হবে, সেই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ আছে। তারা বলছেন, যদি ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিস করতে হয়, তাহলে যথাযথ প্রণোদনা এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে যারা ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিসে রাজি হবে, তাদের ফুল টাইম ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিসে রাখতে হবে।

যেসব সরকারি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস’

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
আরকেআর/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।