ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধার বরাদ্দের পুকুরের ঘাটলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
বীর মুক্তিযোদ্ধার বরাদ্দের পুকুরের ঘাটলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে

চাঁদপুর: নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের বাড়ির পুকুরে এখন দুটি পাকা ঘাটলা। একটি নতুন, আরেকটি পুরোনো।

নতুন নির্মিত ঘাটলার ন্যামপ্লেটে লেখা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহেরের বাড়ির সামনে গণঘাটলা নির্মাণ’।  

ন্যামপ্লেট বসানোর পর শুরু হয় সরগোল। কার বাড়িতে গেল কার ঘাটলা?

যে বাড়িতে ঘাটলাটি নির্মিত হয়েছে, সেই বাড়ি এটি নয়। এটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়ার বাড়ি।  

আর বরাদ্দটি ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহেরের বাড়ির পুকুরের।  

তবে কার ইশিরায় নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান শপথ গ্রহণ না করতেই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির ঘাটলা নিয়ে গেলেন নিজের পুকুরে? জনমনে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

রোববার (২ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলল, নির্মিত ঘাটলার ঢালাই হয়েছে বেশিদিন হয়নি। এখনো সাটারিং খোলা হয়নি। ঘাটলাটির কাজ এখনো শেষ করেননি ঠিকাদার।  

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। নাম একই হওয়ায় একজনের বাড়ির পুকুরের জন্য বরাদ্দ ঘাটলা নির্মাণ হয়ে অন্যজনের পুকুরে।

মূলত: আবু তাহের নামে দুই ব্যক্তিই ইছাপুরা গ্রামের বাসিন্দা। একজন নতুন চেয়ারম্যান আরেকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।  

এ বিষয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বাবা নুরুল ইসলাম প্রধানীয়া বলেন, ঠিকাদার এসে আবু তাহের প্রধানীয়ার বাড়ির কোনটা জানতে চান। তখন আমি জায়গা দেখিয়ে দিই। সবাই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ন্যামপ্লেট বসানোর পর সেখানে লেখা দেখা যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আমার ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহের বলেন, গেল বছরের ২ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা পরিষদের কাছে একটি পাকা ঘাটলার জন্য আবেদন করি। জানতে পারি গত ৩ থেকে ৪ দিন আগে নতুন চেয়ারম্যানের বাড়িতে একটি পাকা ঘাটলা নির্মাণ হয়েছে। আর সেটিতে আমার নাম লেখা।  

ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের কাছে এ নিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন বলে জানান এই মুক্তিযোদ্ধা।

নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া মোবাইল ফোনে জানান, ‘ঘাটলাটি নির্মাণের সময় আমার জানা ছিল না। আমি বাড়িতে থাকি না। মা-বাবা ও ভাইয়েরা থাকেন।  

ঘাটলাটি কেন সঠিক স্থানে নির্মিত হয়নি জানতে চাইলে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান আবু তাহের।

জানা গেছে, চাঁদপুর জেলা পরিষদের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের অর্থায়নে গণঘাটলাটি নির্মিত হয়েছে।

জেলা পরিষদের প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই কাজটি ভুল হয়েছে। আমরা পদক্ষেপ নেব। ঠিকাদারের এখানে দোষ নাই। দোষ হলো যারা তথ্য দিয়েছেন। মূলত: অপরাধটা করেছে ওই চেয়ারম্যানের বাবা। তিনি ঠিকাদারকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।

এখন এর সমাধান কি জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এখন ওই ঘাটলাটি তো আর ভাঙা যাবে না। আমরা ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে একটি নতুন ঘাটলা বরাদ্দ দেব।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।