ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ওষুধ শিল্পে যেভাবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন ডা. জাফরুল্লাহ 

 স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
ওষুধ শিল্পে যেভাবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন ডা. জাফরুল্লাহ 

ঢাকা: যুক্তরাজ্যের ভাস্কুকার সার্জন (রক্তনালীর চিকিৎসক) ছিলেন ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত ডা. জাফরুল্লাহ। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে হানাদারদের থেকে দেশকে মুক্ত করতে পাকিস্তানি পাসপোর্ট পুড়িয়ে জন্মভূমিতে ফিরেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

 

সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেই ছুটে চলেন একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে।

স্বাধীনতা পরবর্তী মানুষের চিকিৎসা সেবা সহজ আর সম্ভাবনাময় ওষুধ শিল্পের বিকাশে নিজের চিন্তামেধা কাজে লাগাতে চান। সে অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার থেকে শুরু করতে পরবর্তী সরকারের প্রধানদেরও নানাভাবে বুঝিয়েছেন।  

যারই ফলশ্রুতিতে ১৯৮২ সালে প্রণয়ন করা হয় ওষুধ শিল্প নীতি। যার উপর ভিত্তি করেই স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। অধিক মাত্রার আমদানির পরবর্তে ইউরোপ-আফ্রিকার অনেক দেশেই রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিকে টেকসই করছে।

 মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরি করা, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর ওষুধ বাজার থেকে বিতাড়নের তিনটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে প্রণয়ণ করা হয় ওষুধনীতি।  

আশির দশকে ওষুধ সিন্ডিকেট ছিল প্রবল। ৮৪ শতাংশ ওষুধই ছিল আমদানি নির্ভর। নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যেমে হঠাৎ করে বন্ধ করাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যেখানে অনেক চিকিৎসকরাই বিশ্বাস করতে পারছিল না, এভাবে বিদেশী নির্ভরতা কমিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে ওষুধ উৎপাদন যে সম্ভব।  

জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ গঠিত কমিটি যদি কঠিন এ সিদ্ধান্তে উপনীত না হতেন তাহলে বাংলাদেশ  এ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারত না। যা এই সময়ে এসে অকপটে স্বীকার করছেন দেশের শীর্ষ ওষুধ কোম্পানিগুলো।  

সরকারের নীতি আর কোম্পানিগুলোর যোগ্যতার কারণে সফলতা আসে এ শিল্পে। ওষুধের লাগামহীন মূল্য এই নীতির মাধ্যমে একটি শৃঙ্খলায় আসে। যার সুফল সবাই ভোগ করছে।

 এ বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোকবার্তায়ও বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, ওষুধশিল্প ও জনস্বাস্থ্য খাতে ডা. জাফরুল্লাহর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ’

 ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জীবনে নানা বিষয় নিয়ে কাজ করলেও নিজের পেশা নিয়ে চিন্তা করতেন বেশি। যার কারণে তকমা পেয়েছেন গরিবের ডাক্তার হিসেবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো বলেছেন,  গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করে স্বল্প ব্যয়ে জনগণের জন্য চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অনেক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তিনিই প্রথম মেয়েদের সাইকেলে চড়িয়ে জনগণের দোরগোড়ায়, গ্রামে পাঠিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য।  

ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রান্তিক গরিব কৃষক পরিবারের মেয়েদেরকে গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে এবং নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন। নিরাপত্তরক্ষী হিসেবে তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরও নিয়োগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
এসকেবি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।