ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৩
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

ঢাকা: ঈদের দ্বিতীয় দিনেও নাড়ির টানে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে।  

এদিনও রাজধানীর একমাত্র নৌ-বন্দর সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।

কেউ একা যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। যাত্রীদের ভিড় থাকলেও অতিরিক্ত কোনো চাপ ছিল না। এখন আর কোনো সময়সূচি মেনে লঞ্চ ছাড়ছে না। যাত্রী পূর্ণ হয়ে গেলেই লঞ্চ ছেড়ে দিচ্ছে। ফলে অনেকটা স্বস্তিতেই রাজধানী ছাড়ছে সাধারণ মানুষ।

রোববার (২৩ এপ্রিল) সদর ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের দ্বিতীয় দিন দুপরের পর থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ বাড়তে থাকে। বিভিন্ন লঞ্চের স্টাফদের হাক ডাকে মুখরিত ছিল পন্টুন। আজ যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ না থাকায় টার্মিনালে চলাচলে তেমন কোনো কষ্ট হয়নি সাধারণ যাত্রীদের। নির্বিঘ্নেই টার্মিনালে ও লঞ্চে যাত্রীরা ঘুরা ফেরা করতেও পারছে। তবে ভোলা-পটুয়াখালী রুটে যাত্রীদের ভিড় বেশি থাকলেও চাঁদপুর, বরিশাল লাইনে ভিড় কম দেখা গেছে।  
 
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তা ও লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঈদের দ্বিতীয় দিন সকালে দিকে যাত্রীদের চাপ কম থাকলেও বিকেলে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। ঈদের পরে মূলত মানুষ আত্মীয়-স্বজনের বাসাতে বেড়াতে যায়। আবার অনেকে কাজ থাকায় ঈদের পর দিন বাড়ি যায়। এজন্য এদিন একটু যাত্রীদের চাপ থাকে। তবে পদ্মা সেতু হওয়ার পর লঞ্চের যাত্রী ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে।

এদিকে সদরঘাটে আসতে আগে যেমন গুলিস্থান, রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় তীব্র যানজটের কাবলে পড়তে হতো। আজ সেখানে তেমন কোনো দুর্ভোগও পোহাতে হয়নি সাধারণ যাত্রীদের। এসব এলাকা একটু ফাঁকা থাকায় নির্বিঘ্নে যাত্রীরা গাড়ি কিংবা হেঁটে সদরঘাটে যেতে পারছে।  

গ্লোরী অব শ্রীনগর-৮ এর কেবিন ইনচার্জ মো. সুমন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের পর দিন হওয়াতে যাত্রীদের চাপ আছে। তবে সেটা ঈদের আগের মতো নয়। আমাদের লঞ্চ ভরে গেলেই ছেড়ে দেবো। এ মুহূর্তে ৮৩টি কেবিনের মধ্যে ৫০টির মতো বুক হয়ে গেছে। ডেক ও প্রায় ভরে গেছে। আশা করছি সাড়ে ৫টার মধ্যে সব ভরে গেলে লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।  

একই লঞ্চের যাত্রী মো. আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গার্ডের চাকরি করেন। ঈদে তিনি বাড়ি যেতে পারেনি। আজ তিনি বাড়ি যাচ্ছেন। আর পরিবারের সদস্যদের আগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিন তিনি। আজকে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই স্বাচ্ছন্দ্যে যেতে পারবো।  

ঢাকা-মনপুরা- হাতিয়া রুটে চলাচল করা এমভি ফারহান- ৩ লঞ্চের ডেক যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। এ লঞ্চের যাত্রী মো. আবদুস ছাত্তার বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা শহরে রিকশা চালাই। ঈদের মধ্যে রিকশার চাহিদা থাকে। পাশাপাশি রাস্তা ঘাট ফাঁকা থাকে ভাড়াও বেশ পাওয়া যায়। এজন্য ঈদের পরে বাড়ি যাচ্ছি।

বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আজকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ৪৫টি লঞ্চ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এসব লঞ্চ চাঁদপুর, বরিশাল, লালমোহন, বেতুয়া, মৃদ্ধারহাট, মুলাদি, বরগুনা, ভোলা, শৈলা ও শরীয়তপুরসহ ৪৩টি রুটে ছেড়ে যায়। গত বুধবার ১০৭টি ও বৃহস্পতিবার ১৪৪টি এবং শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৩৩টি, শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৮৪টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, লঞ্চে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গত ১৭ এপ্রিল থেকে আমরা তৎপর রয়েছি। সার্বক্ষণিক টহল দেওয়া হচ্ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে না। কোনো কোনো রুটে যাত্রীর চাপ থাকলেও কোনো কোনো রুটে যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। ভোলা, চরফ্যাশন, বরগুনা রুটে যাত্রীর চাপ রয়েছে। তবে যাত্রী কম বরিশালে রুটে। কারণ পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়া যায়। বরিশাল রুটের যাত্রীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমে গেছে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, বৈশাখ মাস হওয়ায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে বার বার মাইকিং করে নৌ-পথে চলাচলের সতকর্তা বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৩
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।