লন্ডন (যুক্তরাজ্য) থেকে: বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাতে কমনওয়েলথকে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (০৭ মে) লন্ডনের হোটেল ক্ল্যারিজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারোনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আলাপে নির্বাচনের বিষয়টি সামনে আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ মহাসচিবকে বলেছেন, আপনারা বিভিন্ন কমনওয়েলথ কান্ট্রি থেকে পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারেন।
বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে কমনওয়েলথকে সহযোগিতা করারও অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কমনওয়েলথ চাইলে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে।
কমনওয়েলথ মহাসচিবকে শেখ হাসিনা বলেন, আপনি নির্বাচন নিয়ে কী কী করতে চান। আমরা অপেক্ষা করছি।
কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে সাহায্য করতে কমনওলেয়থ প্রস্তুত।
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি চায় কমনওয়েলথ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল বললেন, প্রত্যেক পলিটিক্যাল পার্টি কমিটমেন্ট করবে যে, তারা নির্বাচনে যাবে। তারা নির্বাচনে কোনো সংঘাত করবে না। নির্বাচনে না জিতলেও রাজনৈতিক দলগুলো তা মেনে নেবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল অঙ্গীকার করবে।
মোমেন বলেন, স্বচ্ছ-সুন্দর নির্বাচনের জন্য, এটা আমরাও চাই। আমরাও চাই সব পার্টি কমিটমেন্ট করুক, পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওরা (কমনওয়েলথ) বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছে অঙ্গীকার করবে যে, তারা নির্বাচনে অবশ্যই যাবে এবং তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। রাজনৈতিক দলগুলো বলবে তাদের দলের সব লোক সুষ্ঠু নির্বাচন, সংঘাত মুক্ত নির্বাচন করার জন্য যা যা করার সেগুলো করবে।
কমনওয়লথ মহাসচিবের এ প্রস্তাব প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, সেক্রেটারি জেনারেল একটা প্রস্তাব করেছেন যেটা কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশেও হয়েছে। সেটা হলো, বড় রাজনৈতিক দলগুলো একটা রাজনৈতিক অঙ্গীকার করবে যে, তারা সবাই অংশগ্রহণ করবে।
মুনা বলেন, ওনারা (কমনওয়েলথ) চায় অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন। পরে সেটা দেখা যে রাজনৈতিক দলগুলো ওই প্রতিশ্রুতি রাখেন নাকি। এটা উনি (কমনওয়েলথ মহাসচিব) বাংলাদেশের জন্য প্রস্তাব করেছেন।
হাইকমিশনার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ মহাসচিবের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা, ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ও স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার ও দলের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের সংগঠন। বাংলাদেশে বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর কয়েকটি অবৈধ ক্ষমতা দখল করে ক্যান্টনমেন্ট থেকে জন্মগ্রহণ করেছে।
সৌজন্য সাক্ষাতে কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারোনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডের সঙ্গে কয়েকজন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৩
এমইউএম/এমজেএফ