ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী

ঢাকা: ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালানোর উপযোগী করে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

সোমবার (১৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

'ভূমিকম্প ঝুঁকিতে ঢাকা, গণমাধ্যমের করণীয়' শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে ডিআরইউ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধে কোনো প্রযুক্তি না থাকায় ভূমিকম্প অতীতেও হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। আমাদের করণীয় হচ্ছে যেকোনো বিল্ডিং বা অবকাঠামো তৈরি করার সময় ভূমিকম্প সহনীয় ও জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে নির্মাণ করা। রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকায় ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজ চালানোর মতো অবকাঠামো ও সুযোগ নেই। সময় থাকতে আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সেমিনারে তুরস্কের হওয়া সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, তুরস্কে প্রশস্ত রাস্তা ও উন্মুক্ত স্থান ছিল। যেখানে মানুষ ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছিল। ফলে মানুষের প্রাণহানি কম হয়েছে। ঢাকায় সে বাস্তবতা কতটুকু রয়েছে, তা জনগণের সামনে প্রতিনিয়ত উপস্থাপনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।

ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ ভূমিকম্প প্রবণ, ফলে ভবন নির্মাণে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতির পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। ভবনের সঙ্গে সংযুক্ত প্রশস্ত রাস্তা এবং উন্মুক্ত স্থানও জরুরি। নাহলে অন্যান্য দুর্ঘটনার মতোই ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতাও বাঁধাগ্রস্ত হবে।

পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণের দায় সবার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ ব্যতীত কোনো স্থাপনা তৈরি হতে না পারে, সেজন্য যে প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থাপনা তদারকির দায়িত্ব রয়েছে তাদের আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।  

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বেশি লাভের আশায় অনেক প্রতিষ্ঠান রাজউক অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করেন না। নির্মাণকালীন কাজ তদারকির জন্য রাজউক তদারকি সংস্থা নিয়োগ করতে পারে। নির্মাণকালীন সব নিয়ম যথাযথ পালন হয়েছিল কিনা তার জন্য দায়ী থাকবে এ কর্তৃপক্ষ। তদারকি সাপেক্ষে তারা সনদ প্রদান করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কাকে দায়ী করা হবে সেটা ফিক্স করা যায় না। যেমন রানা প্লাজা যখন ভাঙলো, তখন তার মালিককে গ্রেপ্তার করা হলো, কিন্তু সেই ভবনের কন্সট্রাকশন কোম্পানিকে ধরা হয়নি। আমার মতামত থাকবে, যে বিল্ডিং বানাবেন সেটা যেন সার্টিফাইড হয়। যেন কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দায়ী করা যায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, নিয়ম মেনে ভবন, প্রশস্ত সড়ক, উন্মুক্ত স্থান এবং সবুজায়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে আমরা পরিকল্পিত নগর গড়তে চাই। এজন্য পূর্বাচল, হাতিরঝিলসহ নগরের বিভিন্ন এলাকার ভবন মালিকদের সঙ্গে নিয়ে সভার পরিকল্পনা করেছি। পরিকল্পিত নারায়ণের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রণীত সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজউক বদ্ধপরিকর।

ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানির সভাপতিত্বে সেমিনারে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমদ খান, স্থপতি ইকবাল হাবিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জুয়েল মিয়া ও ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।