ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সৎ মায়ের নির্যাতনে ঘর ছাড়া হয়ে গণধর্ষণের শিকার তরুণী!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
সৎ মায়ের নির্যাতনে ঘর ছাড়া হয়ে গণধর্ষণের শিকার তরুণী!

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে এক তরুণীকে (২০) আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। টানা কয়েকদিন আটকে রেখে তাকে গণধর্ষণ করা হয়।

এরই মধ্যে জড়িতদের আটকের মাঠে নেমেছে পুলিশ।

ধর্ষণের শিকার তরুণী সৎমায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। পরে কাজের সন্ধানে খাগড়াছড়ি আসলে তাকে কাজের প্রলোভনে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে গণধর্ষণ করা হয়।

জানা যায়, গত ১১ মে জেলার মাটিরাঙ্গার গৌরাঙ্গ পাড়ার বাসা থেকে সৎ মায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই তরুণী পালিয়ে খাগড়াছড়ি চলে আসে। শহরের জিরোমাইল এলাকায় এসে একটি ঘরে কাজের সন্ধান করতে থাকে। সেখান থেকে এক নারী চার হাজার টাকা বেতনে কাজ দেওয়ার কথা বলে তাকে খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের গামারিতলা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ওই নারী মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সম্পর্কে বাধ্য করে।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলের কথা হয় ওই তরুণীর সঙ্গে। সে জানায়, খুন করে ফেলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্নজনকে ভিডিও কলে আমাকে দেখায়। পরে টানা কয়েকদিন আমাকে বিভিন্ন লোক এসে খারাপ কাজ করে। এ সময় প্রায় ১০ জন তাকে ধর্ষণ করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে এক বৃদ্ধ লোক ওই ঘরে গিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। পরে বাজারে আসলে এক আপাকে ঘটনা খুলে বললে তিনি আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান।

স্থানীয় বিচিতলা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা সুমি আক্তার তরুণীকে নিজ বাসায় নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, বিকেল ৫টায় বাজার করে ফেরার পথে মেয়েটিকে দেখতে পাই। তাকে কোত্থেকে আসছে জানতে চাইলে সে কান্নাকাটি করে এবং বাঁচানোর আকুতি জানায়। আমি তাকে বাসায় নিয়ে আসি। পরে সে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। বিষয়টি আমার এক আপার সঙ্গে পরামর্শ করে সকালে দুইজন মিলে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।

এদিকে জিরো মাইল প্রথমে যে বাসায় মেয়েটি কাজের সন্ধানে যায় সে বাসার মালিক মাওলানা শফিকুল ইসলাম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর কাছে এক মেয়ে কাজের সন্ধানে আসে। তার সাথে একজন মধ্য বয়স্ক নারীও ছিল। ওই নারী মেয়েটিকে কাজে রাখার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই, তাছাড়া মেয়েটিকে অপ্রকৃতস্থ মনে হওয়ায় আর রাখিনি। এরপর তারা চলে যায়।

এদিকে ঘর থেকে পালানো বিষয়ে তরুণী জানায়, ছোটবেলায় তার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা আরেকটি বিয়ে করে। যখন তখন সৎ মা তাকে নির্যাতন করতো। নির্যাতনের ঘটনায় সৎমা জেলও খাটেন। চার মাস আগে বাবা আত্মহত্যা করেন। এরপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।

খাগড়াছড়ি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল’র ভারপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম অফিসার রনজিৎ সরকার বলেন, দুইজন নারীসহ ভিকটিম আমার কাছে আসে। আমি বিস্তারিত শুনে তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছি। যারা এই ঘৃন্যতম ঘটনায় জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আটক করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
এডি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।