ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কাঁচা চা পাতার দাম বাড়ানোর দাবিতে পঞ্চগড়ে চাষিদের মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
কাঁচা চা পাতার দাম বাড়ানোর দাবিতে পঞ্চগড়ে চাষিদের মানববন্ধন

পঞ্চগড়: কাঁচা চা পাতার দাম বাড়ানোর দাবিতে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন করেছে চা চাষিরা। জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে কাঁচা চা পাতার দাম সর্বনিম্ন ৪০ টাকা কেজি দর নির্ধারণ করার দাবি জানান তারা।

রোববার (০৪ জুন) দুপুরে পঞ্চগড়ে চা বাগান মালিক সমিতির ব্যানারে পঞ্চগড়ে চৌরঙ্গী মোড়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল আলম, আনিসুজ্জামান নতুন, শাহজালালসহ বাগান মালিকরা অবিলম্বে পঞ্চগড়ে অকশন মার্কেট দ্রুত বাস্তবায়ন, কাঁচা চা পাতার ওপর কর্তন বন্ধ, ফ্যাক্টরিতে দালালের মাধ্যমে পাতা নেওয়া বন্ধ করা, সরাসরি চা চাষিদের কাছে পাতা ক্রয়, চা চাষিদের পাতার টাকা বাকি রাখা বন্ধ করার দাবিসহ ৯ দফা দাবি জানান।

এসময় বক্তারা বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বলেন, কোম্পানির সিল স্বাক্ষর প্রদান, প্রধানমন্ত্রীর লাগানো চা তথা পঞ্চগড়ের চায়ের মান খারাপ, এমন নাটকের মূল হোতাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক। ব্লাক মার্কেটে ভালো মানের চা বিক্রি বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ চান, ভরা মৌসুমে কারখানা রেশনিংভাবে চালু রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে প্রত্যেক কারখানার প্রতিদিন অন্তত ৫০ শতাংশ ক্যাপাসিটি রাখার এবং পঞ্চগড়ে সরকারিভাবে চা ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান চা বাগান মালিক সমিতির সদস্যরা।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন জানান, গত বছর জেলায় এক কোটি ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৬০ কোটি টাকা। দেশে মোট উৎপাদিত চায়ের ১৯ শতাংশ চা পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হয়েছে। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে নিবন্ধিত চা বাগান ৯টি, অনিবন্ধিত ২১টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান আট হাজার ৩৫৫টি, নিবন্ধিত দুই হাজার ৫৩টিতে ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চায়ের আবাদ হয়েছে।  

পঞ্চগড় উপজেলা সদরের ধাক্কামারা ইউনিয়নের নলেহাপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র চা চাষি আমিনুর রহমান। তিনি অন্য ফসলের জমিতে দুই একর জমিতে চা বাগান করেছেন। সেই বাগানে উৎপাদিত কাঁচাপাতা বিক্রির জন্য ১৫ দিন থেকে বিভিন্ন কারখানায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চা চাষি আমিনুরের মতো পঞ্চগড়ের অধিকাংশ ক্ষুদ্র চা চাষির একই অবস্থা।

আমিনুর রহমান বলেন, নর্থবেঙ্গল চা কারখানায় আমি পাতা দিতাম। তারা আমাকে ১৫ দিন থেকে ঘোরাচ্ছেন। তাদের অনুমতি নিয়ে বাগানে পাতা কাটতে হয়। পরদিন সেই পাতা না নিলে ফেলে দিতে হবে। ১৫ দিন থেকে তিনি তারিখ দিচ্ছেন। পাতা উত্তোলনের আগের দিন মোবাইল ধরছেন না। এভাবেই আমার বাগানের পাতা বড় হয়ে যাচ্ছে। কারখানায় সময়মতো পাতা দিতে পারলে আমি মান অনুযায়ী ৪ থেকে ৫ পাতা পর্যন্ত দিতে পারতাম।

মূলত পঞ্চগড়ে ক্ষুদ্র চা বাগান এখন চা চাষিদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। লাভের গম, ভুট্টা, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে চা উৎপাদন করে কাঁচা পাতা বিক্রি করতে পারছেন না চাষিরা। আবার দীর্ঘমেয়াদি ফসল হিসেবে তৈরিকৃত আশার চা বাগান কেটে অন্য ফসলেও যেতে পারছেন না। এ নিয়ে স্থানীয় চা চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

কারখানা মালিকদের নানামুখী চালবাজির কারণে চা বিক্রি করতে না পেরে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন চাষিরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।