ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৪

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
সিলেটে নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৪

সিলেট: সিলেটে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনার ঘটিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানি। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নগর ভবনের ১২ তলায় অরক্ষিতভাবে করছিল ঠিকাদারি জামাল অ্যান্ড কোম্পানি।

গত ৩ জুন দুপুরে অরক্ষিত নির্মাণ সামগ্রী (লোহার খুঁটি) পড়ে প্রাণ হারান এক সেনা সদস্য।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার চুরির অপবাদ দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কম্পাউন্ডে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সাইট ম্যানেজারসহ কয়েকজন মিলে নয়ন (২২) নামে এক নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থাপকসহ (সাইট ম্যানেজার) চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৯ জুন) সকাল ৯টার দিকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আইয়বুর নামে আরেক যুবককেও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিহত যুবকের নাম নয়ন। তার ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের অংশে ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা জামাল অ্যান্ড কোম্পানির নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। মোবাইল ও টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাইট ম্যানেজারসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। জামাল অ্যান্ড কোম্পানি এর আগে সিলেট সিটি করপোরেশন নগরভবনে ১২ তলায় অরক্ষিতভাবে কাজ করছিল। তাদের নির্মাণ সামগ্রী পড়ে এক সেনা সদস্য নিহত হন। এবার ঠিকাদারি কোম্পানিটির আরেকটি সাইটে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মোবাইল ও টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে ওই দুই যুবককে ধরে নেন জামাল অ্যান্ড কোম্পানির সাইট ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আমিনুলসহ কয়েকজন। তাদের নিয়ে একটি কক্ষে আটকিয়ে কয়েকজন বেধড়ক লাঠিপেটা করেন। এতে ঘটনাস্থলে নয়ন মারা যান এবং গুরুতর অবস্থায় আইয়বুরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত আইয়বুর জানান, সকাল ৬টার দিকে ম্যানেজার তাদের দুইজনকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে একটি কক্ষে আটকিয়ে তাদের দুইজনকে বেধড়ক মারপিট করেন। ম্যানেজারসহ ৪-৫ জন তাদের মারধর করেন। তাদের বিরুদ্ধে ৪টি মোবাইল ও টাকা চুরির অভিযোগ করা হয়। সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে পেটাতে থাকেন। অথচ তারা চুরি করেননি। পিটুনিতে জ্ঞান হারানের পর্যায়ে পানি খেতে চাইলেও দেওয়া হয়নি। তখন নয়ন মারা গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। তিনি ২০-২৫ দিন ধরে এখানে কাজ করছেন।

গত শনিবার (৩ জুন) দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশন নগর ভবনের নির্মাণাধীন ১২ তলা থেকে লোহার পাইপ পড়ে সেনা সদস্য লেন্স কর্পোরাল দেলোয়াল হোসেন নিহত হন। তিনি সিলেট সেনানীবাসের ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ৫০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি কোরে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন জুগিরগোফার রায়পুর গ্রামে। তিনি স্ত্রী ও ১ ছেলে রেখে গেছেন।

এ ঘটনায় নিহতের সতীর্থ সেনা সদস্য আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে ৫ জনের নামে মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানির মালিক মো. জামাল উদ্দিনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।