ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে মিলে তৃতীয়জনের সন্তান বিক্রির সময় ধরা মা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে মিলে তৃতীয়জনের সন্তান বিক্রির সময় ধরা মা!

ঢাকা: সিরাজ-সাবিহা দম্পতি বসবাস করতেন মিরপুরের পল্লবীতে। তাদের সংসার আলো করে আসে রাজ, দুজনের প্রথম সন্তান।

অথচ টাকার লোভে রাজকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন সাবিহা। স্থানীয়রা ধরে ফেলায় এ অপকর্ম করতে পারেননি তিনি।

গত শনিবার (৩ জুন) পল্লবীর ১২ নম্বর পূর্ব কুর্মিটোলা ক্যাম্পে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব তথ্য পাওয়া যায় শুক্রবার (৯ জুন)।

জানা গেছে, এক বছর আগে অটোরিকশা চালক সিরাজ আর সাবিহার বিয়ে হয়। পরে তারা ক্যাম্পেই বসবাস শুরু করেন। গতমাসে (মে) সিরাজ-সাবিহার সন্তান রাজের জন্ম হয়।

সিরাজের মা পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, ওই দিন (শনিবার) সকালে আমার পুতের বৌ আয়া কইসে আপনের নাতিরে ইন্দুরে (ইঁদুরে) কামড়াইসে। ওরে লয়া ডাক্তার দেহাইতে যাইবো। আমি রাজেরে দেখতে গিয়া ওর মুখে খামচির দাগ দেখসি। পরে সাবিহায় আমার কিছু না কয়া রাজেরে নিয়া ঘরেত্তে বাইরায়া গেসে। পরে হুনি ওয় (সাবিহা) ওর আগের স্বামীর কাছে গেছে রাজেরে নিয়া ওরে বেইচ্চা ফালাইবো। বাউনিয়া বান্ধে (বাউনিয়া বাঁধ) গেসিলো ওরা। পরে লোকজন ওগোরে ধইরা পুলিশে দিসে।

সাবিহার সন্তান বিক্রির ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও নিজের পেটের দুই সন্তানকে অর্থের লোভে তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন তার দ্বিতীয় স্বামী মনা। পারভীন জানান, সাবিহার প্রথম স্বামীর নাম হাবিব। তার দুই সন্তানকে সাবিহা দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এ ঘটনার পর তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। পরে মনাকে বিয়ে করেন সাবিহা। তাদেরও ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল।

এসব কথা তারা জানতেন না পারভীন বা সিরাজ। রাজকে বিক্রির সময় সাবিহার এসব অপকর্মের কথা তারা জানতে পারেন। মনার সঙ্গে ‘ছাড়াছাড়ি’ হলেও তার সঙ্গে মিলেই সন্তান বিক্রি করতেন সাবিহা।

পুলিশ জানায়, স্থানীয়রা তাদের ধরে ফেলার পর মনা ঘটনার ব্যাপারে স্বীকার করেছে। পুলিশের কাছেও তিনি জানিয়েছেন, সাবিহা টাকার লোভে আগের দুই সন্তানকে বিক্রি করেছেন। টাকা দিয়ে তিনি গয়না, টিভি, ফ্রিজ ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছে। রাজকেও ৮০ হাজার টাকায় বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, এসব ঘটনার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সাবিহা তার দ্বিতীয় স্বামী মনার সঙ্গে চলে যান।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, কুর্মিটোলা ক্যাম্পে এ ঘটনার পর শিশু রাজকে তার দাদির জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। সাবিহা তার সন্তানকে নিতে রাজি হয়নি। তিনি তার দ্বিতীয় স্বামী মনার ঘরে ফিরে গেছেন। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।