ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ শেষ হবে বিআরটি প্রকল্প

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ শেষ হবে বিআরটি প্রকল্প

ঢাকা: আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, এর মধ্যে তেজগাঁও পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।

আগামী নির্বাচনের আগেই তেজগাঁও পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেস চালু করা যাবে। বাকি অংশটি নির্বাচনের পরে সম্পন্ন করা হবে। এদিকে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত চালু করা হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী যেদিন সময় দেবেন আমরা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আপাতত এটুকু পর্যন্ত আমাদের টার্গেট রয়েছে।

শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে টঙ্গীর চেরাগআলীতে বিআরটি প্রকল্পের ৪ কিলোমিটার সেতু টঙ্গী থেকে চেরাগআলী পর্যন্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ওবায়দুল কাদের।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করেছি। কিন্তু সড়ক ও পরিবহনে শৃঙ্খলাটা আমাদের খুব দরকার। নিরাপদ সড়কের যে দাবি সেটা বাস্তবায়ন করা জরুরি। সে কারণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমরা একটা রোড সেফটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এই প্রজেক্টে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। সার্বিকভাবে আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার রাস্তার শৃঙ্খলা, পরিবহনের শৃঙ্খলা। এটার কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বিআরটির এই প্রজেক্ট নিয়ে আমি অনেকবার এসেছি, অনেক কথা বলেছি। এই প্রজেক্টটি গাজীপুরবাসীর একটি ভোগান্তির কারণ হয়েছিল। তবে রোজার ঈদের আগে টঙ্গী ফ্লাইওভারটি চালু করে দেওয়া হয়, এতে ভোগান্তি অনেকটা কম ছিল।

কোরবানি ঈদের আগে যেটা বেশি ভোগান্তি হতে পারতো সেটা হলো সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, যেটা টঙ্গী থেকে চেরাগালি পর্যন্ত। সেটিও ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্টেশন রোড সেকশনও রয়েছে।

তিনি বলেন, এই ঈদের আগেই ইনশাল্লাহ এলিভেটেড এক্সপ্রেস দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এটা আমাদের অনেক কাজে আসবে এবং এর সঙ্গে নিচের যেই সড়কগুলো ছিল, সেগুলো খোলা থাকবে। এদিকে বিআরটি প্রকল্পের জসিম উদ্দিন থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত অংশের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও ঈদের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং সেটি চালু করে দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, আগে এসব জায়গায় অনেক ভোগান্তি হয়েছে, এখন আর মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হবে না। গত রমজানের ঈদে এই স্থানগুলোতে কোনো ভোগান্তি সৃষ্টি হয়নি। তবে এখন বৃষ্টির একটা বিষয় আছে। সড়কের পাশে পশুরহাট, গাড়ি চলাচল এগুলো সব মিলিয়ে কিছুটা ভোগান্তির বিষয়ে আছে। তবে এ বিষয়ে আমরা একটা প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।  

রমজানের ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদ চ্যালেঞ্জিং বলে উল্লেক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যেই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তবে এই চ্যালেঞ্জও আমরা মোকাবিলা করতে পারব ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একদিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন করেছেন। এটি বিরল একটি ঘটনা। আগামীতেও এরকম আরও ১০০ সেতু উদ্বোধন করা হবে।

বিআরটি প্রকল্পের এই সড়কে কি বিআরটির বাস চলবে না অন্যান্য গাড়ি চলাচল করতে পারবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেখানে ছয় লেন রয়েছে, সেখানে সব ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে, বিআরটির বাস চলাচলের জন্য মাঝের লাইনে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।

তিনি বলেন, দুই-একটা প্রকল্প ছাড়া আর কোনো প্রকল্পে সমালোচনামূলক কথাবার্তা আমাকে শুনতে হয়নি। এই প্রজেক্টে আমাকে অনেক সমালোচনামূলক কথাবার্তা শুনতে হয়েছে। তারপরও আমরা এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে আটঘাট বেঁধেই নেমেছি। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু আমরা যখন শুরু করেছি তখন এই প্রকল্প শেষ করেই ছাড়বো।

সড়কের যানজট ও বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে এবার কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতবার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এবার একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কোরবানির ঈদ একটু চ্যালেঞ্জিং, এর জন্য কিছু বাড়তি উদ্যোগ আমাদের নেওয়া হয়েছে। পশুবাহী গাড়ি ধীর গতিতে চলে, সে বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রেখেছি। গার্মেন্টস কর্মীদেরও যাতে এবার ছুটি সময়মতোত দিয়ে দেয়, সে ব্যাপারেও আমাদের তারা (মালিকরা) কথা দিয়ে গেছেন। পশুর হাটকে কেন্দ্র করেও যাতে রাস্তায় কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, সে ব্যাপারে আমরা নজদারি করব।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হবে, এটা আমাদের মধ্যে অনেকেই আশা করেননি। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ হয়েছে। এতগুলো প্রজেক্ট বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে, এগুলো কেউ চিন্তাও করেননি। কাজ করতে গিয়ে দুই-একটা জায়গায় সমস্যা হতেই পারে। সমস্যাটা কেন হয়, এটা আপনারা ভালো করেই জানেন। আমরা যে বিদেশি কোম্পানিকে দিয়েছি, তাদের যে কার্যক্রম, তাদের ধীরগতি একটা সমস্যা। এদিকে তাদের আবার ফান্ডিংয়েরও প্রবলেম রয়েছে। এসব কিছু মোকাবিলা করতেই দেরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
এসজেএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।