ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ

সব অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৩
সব অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা

কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গারা ভালো নেই। শিবিরগুলোতে অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে সাধারণ রোহিঙ্গাদের।

এমন পরিস্থিতিতে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে চান রোহিঙ্গারা। আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবসে এমনই প্রত্যাশা তাদের।

রোহিঙ্গারা বলছেন, ক্যাম্পের জীবন জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে এক ঘেয়ে জীবন ও পাখির খাঁচায় বন্দি ঘরে তাদের আর ভালো লাগছে না।

প্রসঙ্গত, উখিয়া, টেকনাফ ও নোয়াখালীর ভাসানচরে বসবাস করছে প্রায় ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ছয় বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের বলেন, নাগরিকত্বসহ সব অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। আমরা চাই নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন।

২০১৭ সাল থেকে ডব্লিউএফপি রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। কিন্তু দিন দিন তা কমিয়ে আনা হচ্ছে- বলেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার শফি উল্লাহ।  

তিনি বলেন, গত তিন মাসে প্রতিমাসে মাথাপিছু বরাদ্দ ১২ ডলার থেকে ৮ ডলারে নিয়ে এসেছে ডব্লিওএফপি (বিশ্ব খাদ্য সংস্থা)। এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা কীভাবে বাঁচবে।

‘নাগরিকত্ব, নিজ ভিটেমাটিতে ফেরত পাঠানো, জাতিসংঘের নিরাপত্তাসহ সব অধিকারসহ আমরা আমাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চাই। ’ 

উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের এক নেতা বলেন, ২০১৭ সালে আসার পর কয়েক বছর আমরা ভালোই ছিলাম। সহায়তার পরিমাণও বেশি ছিল। কিন্তু এখন রোহিঙ্গা শিবিরজুড়ে শুধু আতঙ্ক।

প্রতিদিন খুনোখুনি, মারামারি, কাটাকাটি, অপহরণসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের কারণে এখন নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় এখানে। এমন কোনোদিন নেই মানুষ খুন হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা মোটেও ভালো নেই- যোগ করেন তিনি।

কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ সরকার খুবই আন্তরিক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় সরকার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সম্প্রতি চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসনের কাজ এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা দুবার এখানে সফরে এসেছেন। রোহিঙ্গা নেতাদের একটি প্রতিনিধিদলও মিয়ানমার সফর করেছেন। অনেক রোহিঙ্গা ফিরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা আশাবাদী দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু হবে- বলেন আরআরআরসি।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ চলে আসে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। এছাড়া নতুন-পুরোনো মিলে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবির ও নোয়াখালীর ভাসানচর বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। কিন্তু রোহিঙ্গা আগমনের প্রায় ছয় বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৩
এসবি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।