ঢাকা: দুর্যোগ পূর্বাভাসের সক্ষমতা উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘ আগ্রহী। জাতিসংঘ মহাসচিবের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) মামি মিজুতোরি এমনটি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
মামি মিজুতোরি বলেন, বাংলাদেশ ৩০টি দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় আছে। সারা বিশ্বের দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা ৩০টি দেশকে নির্বাচিত করে তাদের আগাম দুর্যোগের বার্তা কীভাবে পাওয়া যায়, সে ধরনের প্রকল্পের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে এসেছি দেখতে যে, তারা দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটুকু সক্ষম। বিশেষ করে সাইক্লোন কীভাবে মোকাবেলা করে তারা। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ১৯৭০ সাল থেকে বাংলাদেশ এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করে মৃত্যুহার কমিয়েছে। বিশ্বের জন্য এটি বড় উদাহরণ। আমরা এ দেশের দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে আরও সহযোগিতা করতে আগ্রহী। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জলবায়ু পরিবর্তন দিনে দিনে ঝুঁকির পর্যায়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর এসব মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি এখানে এসেছি কীভাবে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করা যায়, তা দেখার জন্য। আগাম বার্তা কীভাবে দেওয়া যায়, তা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের নির্দেশনা আছে। বাংলাদেশে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু সেগুলো পুরোনো। সেজন্য নতুন পদ্ধতি ব্যবহারে দেশটিকে কীভাবে সহায়তা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি।
জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অনেক প্রকল্পেই জাতিসংঘ সহায়তা করে আসছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানুষের সহায়তার জন্য কাজ করছে জাতিসংঘ, বিশেষ করে এসব এলাকায় নারীর ক্ষমতায়নে আমরা কাজ করছি। এদেশে প্রতি বছরই বন্যায় প্লাবিত হয়। সরকার বন্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু প্রকল্প নিয়েছে বলে জেনেছি। দরিদ্র ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে জাতিসংঘ।
এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, জাতিসংঘ বহুজাতিক সংস্থা হিসেবে আমাদের নানা ধরনের সহায়তা করে থাকে। আমাদের দেশে ঝড়, ভূমিকম্প ও আবহাওয়া সম্পর্কিত দুর্যোগ- আসার আগে এর আগাম বার্তা নিয়ে কীভাবে দুর্যোগটি প্রশমন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে, এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতি খুবই ভালো। ৩০টি দেশকে তারা আগাম বার্তার প্রকল্পের জন্য বেছে নিয়েছে।
আগাম বার্তার পদ্ধতিকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়ে মামি মিজুতোরির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগ কীভাবে প্রশমন করা যায়, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনি। এর আগে ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বা মানবসৃষ্ট যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় তারা (জাতিসংঘ) আমাদের সহায়তা দেবে। এ সব বিষয়ে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৩
এসএমএকে/আরএইচ