ঢাকা: শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে তুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে তর্ক করায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের মারধরের শিকার হন রাজধানীর পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লক এলাকার বাসিন্দা সাকিব। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন।
ঘটনাটির শুরু হয় গত বুধবার (১২ জুলাই)। এদিন সাকিব তার স্ত্রী দিয়াকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চান। কিন্তু বাধ সাধের দিয়ার পরিবার। পরে বিষয়টি নিয়ে পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লক এলাকায় নিজ বাড়ির সামনেই সাকিব ও তার শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় দিয়াও তার সঙ্গে ছিলেন। খানিক বাদেই শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা চানের অন্যতম সহযোগী মাসুম ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গ সাকিবের ওপর হামলা চালায়। তার মা ও বোন বাসা থেকে নেমে হামলাকারীদের থামাতে চাইলে তাদের ওপরও অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
পরবর্তীতে ঘটনাটি নিয়ে সাকিব স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে তাকে ও তার বাবাকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা সালিশে ডাকে। সেখানে তাদের মারধর করা হয়। বিষয়টি সাকিবের ভাই ইরফানকে জানায় পরিবার।
তাকে বলা হয়, স্থানীয় বিহারি নেতা মোস্তাক, তার ছেলে রাজুসহ প্রায় এক দেড়শ ছেলে সাকিব ও তাদের বাবাকে আটকে ফেলে বিচার মানতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। ইরফান সেখানে যান এবং জানান তারা বিচার মানবেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তাক তার গাল চেপে ধরে গালিগালাজ করে। পরে তার ছেলে রাজু ও শীর্ষ সন্ত্রাসী কালো চানের অন্যতম সহযোগী মাসুমসহ প্রায় ১০-১২ জন তাকেও মারধর করে। হুমকি দিয়ে তাকে বলা হয়, বিচার না মানলে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অভিযোগকারী মো. সাকিব বলেন, আমার স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যেতে চেয়েছিলাম। আমার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে এ ব্যাপারে অনুমতি চাইতে গেলে তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয় আমাদের বাড়ির সামনে। এ সময় মাসুম, জাহিদ ও পাপ্পুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক যুবক-কিশোররা আমার ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছিলাম। এখন তারা বলছে আমি নাকি যৌতুক চেয়ে আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছি। অথচ আমার স্ত্রী আমার সাথেই আছে।
সাকিবের স্ত্রী দিয়া বলেন, আমার স্বামী কারও কাছে যৌতুক চাননি। আমাকে কখনো নির্যাতনও করেননি। আমার প্রয়োজনে বাবার কাছে প্রয়োজনীয় জিনিস চেয়েছিলাম। সেটাও বিয়ের সময়ের ঘটনা। শুধু শুধু আমার পরিবারের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমার স্বামীর সাথে আমি অনেক ভালো আছি। শুধু শুধু তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিহারি নেতা মোস্তাক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ছেলেকে আমি বা আমার ছেলে মারধর করেছে এই অভিযোগ সত্য নয়।
তবে এ ঘটনার সময়কার একটি ভিডিও চিত্র হাতে এসেছে বাংলানিউজের। স্থানীয় এক বাসিন্দার বাসা থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লক এলাকায় ভুক্তভোগীদের বাসার সামনে প্রায় এক-দেড়শ মানুষের জটলা। বিহারি নেতা মোস্তাক ও তার ছেলেদের দেখা যায় ভুক্তভোগীর বাবাকে আঙুলে তুলে হুমকি দিতে। এক পর্যায়ে ইরফানকে ধাক্কা ও মারধর করতেও দেখা গেছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
এমএমআই/এমজে